নতুন বছরে বাংলাদেশের জনস্বাস্থ্য খাতে বেশ কিছু বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সুচিকিৎসার অভাব এবং পরিবেশ দূষণ এই চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে অন্যতম।
করোনা মহামারির পর থেকে দেশে নতুন কোনও মহামারি দেখা না গেলেও, বছরজুড়ে নানা রোগের প্রাদুর্ভাব লক্ষণীয়। গ্রীষ্মকাল থেকে শুরু করে মৌসুম পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন রোগের প্রকোপ বাড়ছে। বিশেষ করে ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, টাইফয়েড এবং শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণজনিত রোগগুলোর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় এখনও অনেক ঘাটতি রয়েছে। সঠিক চিকিৎসা সুবিধার অভাব, পর্যাপ্ত চিকিৎসক ও নার্সের সংকট, এবং আধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জামের অভাবে রোগীদের সঠিক সময়ে সুচিকিৎসা প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে না। এছাড়া, গ্রামীণ এলাকায় স্বাস্থ্যসেবার মান আরও নিম্নমানের, যা সেখানকার মানুষের জন্য বাড়তি ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পরিবেশ দূষণও দেশের জনস্বাস্থ্যের জন্য বড় হুমকি হিসেবে দেখা দিয়েছে। বায়ুদূষণ, জলদূষণ এবং শব্দদূষণের মাত্রা ক্রমশ বাড়ছে, যা মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। বিশেষ করে বায়ুদূষণের কারণে শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি এবং হৃদরোগের মতো সমস্যার প্রকোপ বাড়ছে। এছাড়া, জলদূষণের ফলে পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাবও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলায় সরকারকে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বাড়ানো, স্বাস্থ্যসেবা অবকাঠামোর উন্নয়ন, এবং পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি। এছাড়া, সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি এবং স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপনের অভ্যাস গড়ে তোলার ওপর জোর দেওয়া উচিত।
সর্বোপরি, নতুন বছরে জনস্বাস্থ্যের এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলায় সরকার, স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান এবং সাধারণ জনগণকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে, যাতে দেশের মানুষের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করা যায়।