দেশে নতুনভাবে এইডস সংক্রমিতদের মধ্যে ৫৫ শতাংশ বিবাহিত
গত এক বছরে দেশে নতুন করে এইচআইভি বা এইডস সংক্রমণের হার অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। এ সময়ে ১ হাজার ৪৩৮ জন নতুন করে এইডস রোগী শনাক্ত হয়েছেন, যা দেশের ইতিহাসে এ ধরনের রোগীর সর্বোচ্চ সংখ্যা। একই সময়ে এই রোগে মৃত্যু হয়েছে ১৯৫ জনের। আক্রান্তদের মধ্যে ৭৭ শতাংশ পুরুষ, ২২ শতাংশ নারী এবং ১ শতাংশ হিজড়া। নতুন আক্রান্তদের মধ্যে ৫৫ শতাংশই বিবাহিত।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এসটিডি/এইডস শাখার তথ্য অনুযায়ী, নতুন সংক্রমিত ও মৃতদের মধ্যে অধিকাংশের বয়স ২৫ থেকে ৪৯ বছরের মধ্যে (৬৩ শতাংশ), এবং ২০ থেকে ২৪ বছর বয়সীদের মধ্যে রয়েছে ২১ শতাংশ। এদের মধ্যে ১০ শতাংশ রোহিঙ্গা, ১ শতাংশ নারী যৌনকর্মী এবং ১ শতাংশ হিজড়া। সংক্রমিতদের মধ্যে ঢাকায় ৪০৬ জন, চট্টগ্রামে ৩২৬ জন, খুলনায় ১৫৪ জন, রাজশাহীতে ১৪৭ জন এবং অন্যান্য বিভাগে ৪৪ থেকে ৮৬ জন শনাক্ত হয়েছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইন ডিরেক্টর ডা. মাহফুজার রহমান সরকার বলেন, পরীক্ষার সক্ষমতা বাড়ায় শনাক্তের হার বেড়েছে। তবে এই বৃদ্ধি মানেই সংক্রমণের প্রকৃত হার বেড়েছে, তা বলা যাবে না। তিনি আরও বলেন, অধিকাংশ রোগী চিকিৎসার আওতায় আনার ফলে রোগটি ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি কম।
বিশেষত চট্টগ্রাম বিভাগে এইডস সংক্রমণের হার সবচেয়ে বেশি। নতুন আক্রান্তদের মধ্যে প্রায় ১৫০ জন চট্টগ্রামে শনাক্ত হয়েছেন। এছাড়া প্রায় ১ হাজার ২০০ রোহিঙ্গা এইডসের চিকিৎসা নিচ্ছেন। তারা উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কক্সবাজার জেলা হাসপাতাল এবং আইওএম ক্লিনিক থেকে এই চিকিৎসা পাচ্ছেন।
সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশে এইডসে আক্রান্তের মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৬ হাজার ৬৯ জনে। ১৯৮৯ সালে প্রথম এইডস রোগী শনাক্ত হওয়ার পর থেকে এ সংখ্যা ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, পুরুষ যৌনকর্মী, সমকামী, হিজড়া, এবং শিরায় মাদক গ্রহণকারীদের মধ্যে সংক্রমণের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি।
তবে বিশেষজ্ঞরা আরও বলেন, বৈষম্য, কুসংস্কার, ভয়, এবং লজ্জার কারণে এই জনগোষ্ঠীর সদস্যরা চিকিৎসা সেবা গ্রহণে পিছিয়ে থাকে। এ কারণে তারা নতুন সংক্রমণের একটি বড় ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে। বৈষম্যহীন সেবা নিশ্চিত করার মাধ্যমে তাদের চিকিৎসা ব্যবস্থার অন্তর্ভুক্ত করতে হবে, অন্যথায় সংক্রমণের হার নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়বে।