দেশজুড়ে কোরবানির রেকর্ড: এবারের ঈদুল আজহায় ৯১ লাখের বেশি পশু কোরবানি

মুসলিম বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা বাংলাদেশে উদযাপিত হয়েছে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও উৎসবমুখর পরিবেশে। এবার সারা দেশে বিপুলসংখ্যক পশু কোরবানি করা হয়েছে, যা অতীতের অনেক বছরের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের হিসাবে, ২০২৫ সালে দেশে কোরবানি হয়েছে ৯১ লাখ ৩৬ হাজার ৭৩৪টি পশু। এর মধ্যে গরু ও মহিষ মিলিয়ে কোরবানি হয়েছে ৪৭ লাখ ৫ হাজার ১০৬টি এবং ছাগল ও ভেড়া মিলিয়ে ৪৪ লাখ ৩০ হাজার ৬৬৮টি। অন্যান্য পশুর সংখ্যা ৯৬০টি।

এই হিসাব প্রস্তুত করেছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। তারা জানিয়েছে, স্তরায়িত দৈব নমুনায়নের (Stratified Random Sampling) ভিত্তিতে প্রতিটি উপজেলার তিনটি ভিন্ন আকারের গ্রাম থেকে অন্তত এক শতাংশ নমুনা সংগ্রহ করে এই তথ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর প্রায় ৩৩ লাখ ১০ হাজার ৬০৩টি কোরবানিযোগ্য পশু অবিক্রীত ছিল। এই বিষয়ে তারা জানায়, এ বছর পশুর উৎপাদন তুলনামূলক বেশি হওয়ায় কিছু পশু বিক্রি না হওয়াটা অস্বাভাবিক নয়। এছাড়া এই পশুগুলোকে সামনে বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ব্যবহারের জন্য সংরক্ষণ করা হবে।

বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, সর্বোচ্চ কোরবানি হয়েছে রাজশাহী বিভাগে—২৩ লাখ ২৪ হাজার ৯৭১টি পশু। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ঢাকা বিভাগ, যেখানে কোরবানি হয়েছে ২১ লাখ ৮৫ হাজার ৪০টি। এরপর রয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগ (১৭ লাখ ৫৩ হাজার ৭৩২টি), রংপুর (৯ লাখ ৬৪ হাজার ৯৯৯টি), খুলনা (৮ লাখ ৪ হাজার ২২৪টি) এবং বরিশাল (৪ লাখ ৭৮৩টি)। সবচেয়ে কম কোরবানি হয়েছে সিলেট বিভাগে—মাত্র ৩ লাখ ১৯ হাজার ৮২৩টি পশু, আর তার পরেই রয়েছে ময়মনসিংহ বিভাগ, যেখানে কোরবানি হয়েছে ৩ লাখ ৮৩ হাজার ১৬২টি।

সার্বিকভাবে ঈদুল আজহার কোরবানি প্রক্রিয়া সফল ও সুশৃঙ্খলভাবে সম্পন্ন হয়েছে বলে মনে করছে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। বিপুল সংখ্যক পশু কোরবানির মধ্য দিয়ে এবারও ধর্মীয় এই উৎসবের তাৎপর্য প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছে দেশের প্রতিটি অঞ্চলে।