দীর্ঘায়ুর চেয়ে সুস্থ জীবনই এখন বেশি গুরুত্বপূর্ণ
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেশিরভাগ বয়স্ক মানুষ একাধিক দীর্ঘমেয়াদি রোগে ভুগছেন। যদিও আধুনিক চিকিৎসা ও উন্নত স্বাস্থ্যসেবার কারণে মানুষের গড় আয়ু উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে, তবুও সেই বাড়তি সময় সুস্থভাবে কাটানো অনেকের পক্ষেই সম্ভব হচ্ছে না।
গবেষণায় দেখা গেছে, মানুষের আয়ুষ্কাল এবং সুস্থ জীবনকালের মধ্যে ব্যবধান ক্রমশ বাড়ছে। বিশ্বব্যাপী এই ব্যবধান প্রায় ৯.৬ বছর, যার মানে হলো জীবনের শেষ দশক প্রায়ই শারীরিক অসুস্থতা বা দীর্ঘমেয়াদি রোগের সঙ্গে কাটছে। যুক্তরাষ্ট্রে এই ব্যবধান আরও বেশি, ১২.৪ বছর, যেখানে মানুষের শেষ জীবনের বড় একটি অংশ শারীরিক সমস্যায় কাটে। গবেষকরা এটিকে দীর্ঘ জীবনের ‘স্বর্ণযুগের’ একটি করুণ বাস্তবতা বলে উল্লেখ করেছেন।
বিশ্বব্যাপী নারীরা সাধারণত পুরুষদের তুলনায় বেশি দিন বাঁচলেও, তাদের অতিরিক্ত সময়ের বেশিরভাগ অসুস্থতার মধ্য দিয়ে কাটে। নারীদের জন্য এই ব্যবধান গড়ে ২.৪ বছর বেশি, আর জার্মানিতে এটি ৩.৬ বছর। যুক্তরাষ্ট্রে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা, মাদকাসক্তি, হাড়ের ক্ষয়, পিঠের ব্যথার মতো বিভিন্ন শারীরিক সমস্যাগুলো নারীদের দীর্ঘায়ু এবং সুস্থ জীবনের ব্যবধানকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
গবেষকরা বলছেন, যেসব দেশে গড় আয়ু বেশি, সেখানেই এই ব্যবধান আরও প্রকট। এর কারণ হলো, জীবনকাল বাড়ানোর প্রযুক্তিগত অগ্রগতি হলেও মানুষের স্বাস্থ্যগত মান উন্নত করার ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত মনোযোগ দেওয়া হয়নি। বিশেষজ্ঞরা তাই দীর্ঘায়ুর চেয়ে সুস্থ জীবনযাপন নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করছেন।
অর্থাৎ, দীর্ঘায়ু তখনই প্রকৃত অর্থে মূল্যবান হবে, যখন তা সুস্থ জীবনযাপনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হবে। এজন্য স্বাস্থ্যকর জীবনধারা, রোগ প্রতিরোধে সচেতনতা, এবং মানসিক ও শারীরিক সুস্থতার প্রতি গুরুত্ব দেওয়া অপরিহার্য।