সোমবার, ১০ই মার্চ, ২০২৫| বিকাল ৫:০৯

দিল্লির ভোটের উত্তাপ: কেজরিওয়ালের হ্যাটট্রিক নাকি বিজেপির প্রত্যাবর্তন?

প্রতিবেদক
staffreporter
ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২৫ ৪:৩৮ অপরাহ্ণ
দিল্লির ভোটের উত্তাপ: কেজরিওয়ালের হ্যাটট্রিক নাকি বিজেপির প্রত্যাবর্তন?

দিল্লির ভোটের উত্তাপ: কেজরিওয়ালের হ্যাটট্রিক নাকি বিজেপির প্রত্যাবর্তন?

দিল্লির ৭০ আসনের বিধানসভা নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে, আর এর মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে এক উত্তেজনাপূর্ণ প্রতিদ্বন্দ্বিতা। ভোটের ফল নির্ধারণ করবে, অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টি (AAP) টানা তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতায় ফিরবে নাকি দীর্ঘ বিরতির পর রাজধানীর মসনদে ফিরে আসবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)।

দিল্লির রাজনীতিতে গত এক দশক ধরে বিকল্প ধারার নেতা হিসেবে রাজত্ব করছেন কেজরিওয়াল। দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলন থেকে উঠে এসে মুখ্যমন্ত্রীর পদ দখল করার পর, তিনি জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন দ্রুতগতিতে। বিশেষ করে রাজধানীর দরিদ্র জনগণের জন্য বিনামূল্যে পানি ও বিদ্যুৎ সেবা দিয়ে তিনি জনসমর্থনের শীর্ষে পৌঁছেছেন। কিন্তু এবারের নির্বাচন তার জন্য সহজ পথ হয়ে থাকছে না, কারণ বিজেপি তাদের প্রচারণায় তাকে ও তার দলকে দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত করছে।

গত বছর একটি বিতর্কিত দুর্নীতির মামলায় কেজরিওয়ালসহ আম আদমি পার্টির (AAP) শীর্ষ নেতারা গ্রেপ্তার হন। অভিযোগ ছিল, তার সরকার মদ বিক্রির লাইসেন্স দেওয়ার বিনিময়ে ঘুষ গ্রহণ করেছিল। দীর্ঘ কারাবাসের পর ভারতের সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে জামিনে মুক্ত হন তিনি।

কিন্তু নির্বাচনের ঠিক আগে, বিজেপি তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আরও জোরালোভাবে সামনে এনেছে। একাধিক নির্বাচনী সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কেজরিওয়ালের দলকে ‘অসৎ’ আখ্যা দিয়ে ভোটারদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানান। কেজরিওয়ালের সঙ্গেই কারাগারে ছিলেন তার দলের আরও তিন গুরুত্বপূর্ণ নেতা—সাবেক উপমুখ্যমন্ত্রী মনীশ সিসোদিয়া, সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈন ও সংসদ সদস্য সঞ্জয় সিং। যদিও এখন সবাই জামিনে মুক্ত।

নির্বাচনে জিতলেও কেজরিওয়াল মুখ্যমন্ত্রী হতে পারবেন কি না, তা নিয়ে রয়েছে আইনি প্রশ্ন। কারণ, সুপ্রিম কোর্ট তাকে জামিন দিলেও সরকারি কাজকর্মে অংশ নেওয়ার অনুমতি দেয়নি। এ কারণে কয়েকদিনের মধ্যেই তিনি পদত্যাগে বাধ্য হন।

তার স্থলাভিষিক্ত হন দলের অন্যতম নেতা অতিশি সিং (জনপ্রিয়ভাবে অতিশি নামে পরিচিত)। যদিও অতিশি দাবি করেন, কেজরিওয়াল মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার জন্য আইনত কোনো বাধার সম্মুখীন নন।

আগামী শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) ভোটগ্রহণ ও গণনা শেষে নির্ধারিত হবে দিল্লির ভবিষ্যৎ। যদি আম আদমি পার্টি সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়, তবে দেখা যাবে—কেজরিওয়াল তার হ্যাটট্রিক জয় ধরে রাখতে পারেন কিনা, নাকি আইনি জটিলতার কারণে মুখ্যমন্ত্রীর পদ অন্য কাউকে দিতে হয়। অন্যদিকে, যদি বিজেপি জয়ী হয়, তবে এটি হবে দিল্লির রাজনীতিতে এক যুগান্তকারী পরিবর্তন।

কেজরিওয়াল বলেছেন, “দিল্লির মানুষ যদি আমাকে ‘সততার সনদ’ দেয়, তবে আমি আবারও মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করব।” তবে শেষ পর্যন্ত এই লড়াইয়ে জয়ী হবে কে? সেটাই দেখার অপেক্ষায় ভারতসহ গোটা রাজনৈতিক বিশ্ব।

মন্তব্য করুন
Spread the love

সর্বশেষ - সর্বশেষ