থার্টি ফার্স্ট নাইটে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় আতশবাজি, পটকা, মদ ও ফানুসের ব্যবহারে নতুন বছরের আনন্দ উদযাপন হলেও তা নিয়ে এসেছে অগ্নিকাণ্ড, আহত শিশু এবং গ্রেফতারের মতো ঘটনা।
সোমবার সন্ধ্যায় চকবাজার এলাকায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগ অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ অবৈধ আতশবাজি, পটকা ও বিস্ফোরকসহ সাজ্জাদ হোসেন রাহাত নামে একজনকে গ্রেফতার করে। বড় কাটারা গলির সোলায়মান টাওয়ারে আরিফ ট্রেডার্সে অভিযান চালিয়ে ১০টি কার্টন এবং ১০০ প্যাকেট চকলেট বোমা, ক্লাস্টার বোমা, পাতা বোমা ও রকেট বোমা উদ্ধার করা হয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে আরও ২-৩ জন পালিয়ে যায়।
পুলিশ জানায়, গ্রেফতারকৃতরা একটি সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্য। সীমান্ত এলাকা থেকে এসব অবৈধ আতশবাজি ও বিস্ফোরক সংগ্রহ করে ঢাকায় এনে মজুত এবং বিক্রি করত।
এদিকে, মঙ্গলবার দিবাগত রাতে রাজধানীর ঢাকা রিজেন্সি হোটেলে ডিজে পার্টির আড়ালে মদের ব্যবসা চলছিল। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের অভিযান চালিয়ে সেখান থেকে ৯২ বোতল বিদেশি মদ এবং ৩৬৭ ক্যান বিয়ার জব্দ করা হয়। অভিযানে চারজনকে আটক করা হলেও হোটেলের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা আগেই পালিয়ে যায়।
অধিদফতরের কর্মকর্তারা জানান, অনুমতি ছাড়াই হোটেলে মদ মজুত ও বিক্রি করা হচ্ছিল। নতুন বছর উদযাপনের নামে এ ধরনের কর্মকাণ্ড সম্পূর্ণ বেআইনি।
নতুন বছর বরণ করতে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় আতশবাজি ও পটকার ব্যবহার অব্যাহত থাকে। ধানমন্ডি ৪ নম্বর রোডে একটি ফানুস পড়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলেও স্থানীয়রা তা দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনেন।
জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট থেকে জানা যায়, পটকা ফোটানোর কারণে দুই শিশু দগ্ধ হয়েছে। আট বছরের ফারহান ১৫ শতাংশ দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। অন্য শিশুকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, মগবাজারসহ ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় আতশবাজি, পটকা ও উচ্চ শব্দে গান বাজানোর ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দারা আতঙ্কিত ছিলেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও এ ধরনের কার্যক্রম থামানো যায়নি।
নতুন বছরের উদযাপনের নামে এ ধরনের কার্যক্রমে জননিরাপত্তা এবং আইনশৃঙ্খলার ঝুঁকি বাড়ছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা রোধে আরও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি।