তেহরান থেকে রাজধানী স্থানান্তরের পরিকল্পনা ইরানের
ইরানের রাজধানী তেহরান নানা সমস্যায় জর্জরিত। যানজট, দূষণ, ভূমি দেবে যাওয়া এবং অতিরিক্ত জনসংখ্যার চাপে নাকাল এ শহর থেকে রাজধানী সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করছে দেশটির সরকার। প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান ও তার প্রশাসনের প্রথম পছন্দ দক্ষিণাঞ্চলীয় উপকূলীয় অঞ্চল মাকরান। ইরনার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
মাকরান অঞ্চল ইরানের সিস্তান-বেলুচিস্তান প্রদেশের অন্তর্ভুক্ত এবং ওমান উপসাগরের তীরে অবস্থিত। ভৌগোলিক আয়তনের দিক থেকে এটি প্রায় ৩ লাখ ৪৭ হাজার বর্গকিলোমিটার, যা বাংলাদেশের তিন গুণেরও বেশি বড়। এছাড়া, পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশের সঙ্গে মাকরানের ১ হাজার কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে।
ইতিহাসে মাকরানের গুরুত্ব বহু পুরনো। খ্রিস্টপূর্ব ৩০৫ সালে চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য গ্রিক রাজা সেলুসিডকে পরাজিত করে এ অঞ্চল দখল করেন। এরপর ২৩১ খ্রিস্টাব্দে ইরানের সাসানিয়ান রাজবংশ মাকরান দখলে নেয়। সাড়ে চার শ’ বছর পর, ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হযরত ওমর (রা.)-এর শাসনামলে এটি ইসলামী বিশ্বের অন্তর্ভুক্ত হয়।
তবে বর্তমানে মাকরান তুলনামূলক অনুন্নত এবং দারিদ্র্যপীড়িত সিস্তান-বেলুচিস্তানের অংশ। তারপরও রাজধানী স্থানান্তরের পরিকল্পনায় এই অঞ্চলকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। ইরানের সর্বশেষ রাজা রেজা শাহ পাহলভির সময় থেকেই রাজধানী পরিবর্তনের আলোচনা চলে আসছে, যদিও সে উদ্যোগ বাস্তবায়ন হয়নি।
সরকারের নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী, মাকরানের ভৌগোলিক ও কৌশলগত গুরুত্বকে কাজে লাগিয়ে সেখানে একটি আধুনিক রাজধানী গড়ে তোলার চিন্তা করা হচ্ছে। তবে প্রকল্প বাস্তবায়ন নিয়ে নানা চ্যালেঞ্জ থাকায় এ সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হতে সময় লাগবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।