তারেক রহমান: বিএনপি গণতন্ত্রে বিশ্বাসী, তাই নির্বাচন চাওয়া স্বাভাবিক
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, “বিএনপি একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে জনগণের শাসন ও গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে, তাই আমাদের পক্ষ থেকে নির্বাচন চাওয়া একেবারেই স্বাভাবিক।” মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) কুমিল্লা টাউন হল মাঠে কুমিল্লা মহানগর বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথি হিসেবে এই মন্তব্য করেন।
তারেক রহমান বলেন, “আমরা ভোটের রাজনীতিতে বিশ্বাসী এবং বাংলাদেশের জনগণের শাসন চাই। এজন্যই বিএনপি স্বাভাবিকভাবে নির্বাচন চায় এবং জনগণের কাছ থেকে ভোট চাইবে।” তার মতে, কিছু বিশেষ শক্তি এই ‘স্বাভাবিক দাবি’কে অস্বাভাবিক করে তোলার চেষ্টা করছে, যা দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে গভীর প্রশ্ন সৃষ্টি করছে। তিনি বলেন, “এখন যে পরিস্থিতি, তাতে নির্বাচন বিলম্বিত হলে কারা সুবিধা পাবে এবং তাদের স্বার্থ উদ্ধারে এটি সহায়ক হবে—এই প্রশ্নটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।”
এসময় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আরও বলেন, “আমরা বাংলাদেশে অস্থিতিশীলতা দেখতে চাই না, বরং আমরা দেশের উন্নয়ন এবং স্থিতিশীলতা কামনা করি। আমাদের লক্ষ্য দেশকে গঠন করা এবং দেশে স্থিতিশীলতা আনা, কারণ কোনো জাতি যদি উন্নতির পথে এগিয়ে যেতে চায়, তবে সেটি সম্ভব কেবল স্থিতিশীলতা বজায় রাখার মাধ্যমে।” তিনি দেশের অর্থনীতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিচার ব্যবস্থা, নির্বাচন ব্যবস্থা ও অন্যান্য রাষ্ট্রীয় কাঠামোর ওপর গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন, যেগুলি বর্তমান সরকারের সময় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
তারেক রহমান শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, “আমরা লক্ষ্য করছি, অন্তর্বর্তী সরকারের কিছু কিছু সদস্যের বক্তব্যে অস্থিতিশীলতা তৈরি হচ্ছে এবং এর ফলস্বরূপ দেশের বিভিন্ন সেক্টরে অস্থিরতা বেড়েছে। অর্থনীতি এবং প্রশাসনের বিভিন্ন দিকেও এই অস্থিরতার প্রভাব পড়েছে।” তিনি আরও বলেন, “বিএনপি সরকারকে সহযোগিতা করতে চায় এবং আমরা আশা করি, সরকার সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করবে। এর মাধ্যমে দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া আরও গতিশীল হবে।”
বিএনপি চায়, সরকার নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সম্মতি নিয়ে ক্ষমতায় আসুক এবং জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। তারেক রহমান বলেন, “আমরা আশা করি, সরকার জনগণের নিরপেক্ষতার প্রত্যাশাকে সম্মান করবে এবং একটি মুক্ত, সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করবে, যাতে জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, “যত বেশি গণতান্ত্রিক চর্চা চালিয়ে যেতে পারব, ততই দেশ এবং জনগণকে ষড়যন্ত্রের হাত থেকে রক্ষা করতে পারব। আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য হল দেশকে গণতন্ত্রের ভিত্তিতে শক্তিশালী করা, যাতে জনগণের ভোটের অধিকার সুরক্ষিত থাকে এবং দেশের জনগণ নির্বিঘ্নে তাদের মতামত প্রকাশ করতে পারে।”
সম্মেলনে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু। এছাড়া, কুমিল্লা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাকারিয়া তাহের সুমন, বিএনপির কর্মসংস্থান বিষয়ক সম্পাদক হাজী আমিন উর রশিদ ইয়াছিন, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আশিকুর রহমান মাহমুদ ওয়াসিম, কুমিল্লা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়া সহ দলের বিভিন্ন শীর্ষ নেতারা বক্তব্য রাখেন।
সম্মেলনে নতুন কমিটি গঠন করা হয় এবং বিএনপির কুমিল্লা মহানগর বিএনপির সভাপতি পদে উদবাতুল বারী আবু, সাধারণ সম্পাদক পদে ইউসুফ মোল্লা টিপু এবং সাংগঠনিক সম্পাদক পদে রাজিউর রহমান রাজিব বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।