‘তারেক রহমানের নাম উচ্চারণ করতে অজু করবেন’ মন্তব্যে বুলুর দুঃখ প্রকাশ
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নাম উচ্চারণ করতে হলে ওজু করতে হবে—এমন মন্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু। বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তিনি এই দুঃখ প্রকাশ করেন।
বিজ্ঞপ্তিতে তিনি বলেন, কুমিল্লা মহানগর বিএনপির সম্মেলন ও কাউন্সিল অনুষ্ঠানে উদ্বোধক হিসেবে বক্তব্য দেওয়ার সময় ‘তারেক রহমানের নাম উচ্চারণ করতে হলে অজু করবেন’—এই কথাটি মনের অজান্তে বলে ফেলেছি। আমি স্বীকার করছি, এমন মন্তব্য করা মোটেও শোভন হয়নি। আকস্মিকভাবে উচ্চারিত এই বক্তব্যের জন্য যদি দলের নেতাকর্মী, সমর্থক ও শুভানুধ্যায়ীদের মনে আঘাত লাগে, তাহলে আমি আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি। আমার এই বক্তব্যের সঙ্গে দলের নেতাকর্মীদের কোনো সম্পর্ক নেই। এটি নিছকই আমার ব্যক্তিগত ভুল।
এর আগে মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে কুমিল্লা টাউন হল মাঠে কুমিল্লা মহানগর বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে বরকত উল্লাহ বুলু এই বিতর্কিত মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘কিছু অর্বাচীন নাবালক উপদেষ্টাদের বলতে শোনা যায়—জিয়াউর রহমানের বাবা নেতা হলে ছেলেরাও কি নেতা হবে নাকি? আমি সেসব অর্বাচীন নাবালক বাচ্চাদের বলতে চাই—বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের পুত্র তারেক রহমান। তিনি বাংলাদেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দলের চেয়ারপারসনের সন্তান এবং শহীদ জিয়ার উত্তরসূরি। তার নামটি উচ্চারণ করতে হলে অজু করবেন। আপনাদের মতো নাবালক উপদেষ্টারা এ ধরনের কথা বলে দেশকে বিভক্ত করবেন না। তারেক রহমান বাংলাদেশের অবিসংবাদিত নেতা। তিনি বাংলাদেশে ফিরে আসবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘তারেক রহমান ৩১ দফা দিয়েছেন আড়াই বছর আগে। যদি কোনো সংস্কারের প্রয়োজন হয়, আপনাদের যদি কোনো উপদেশ থাকে, তাহলে সংযোজন করবেন। তিনি বলেছেন, বিএনপি যদি ২৮০ সিটও পায়, তবুও এককভাবে সরকার গঠন করবে না। যারা আমাদের সঙ্গে আন্দোলন-সংগ্রামে ছিল, সবাইকে নিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করব।’
এই বক্তব্যের পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। বিশেষ করে ‘তারেক রহমানের নাম উচ্চারণের আগে অজু করতে হবে’—এমন মন্তব্যকে কেন্দ্র করে নানান প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। বিষয়টি নিয়ে বিএনপির অভ্যন্তরীণ পর্যায়েও মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। অনেকেই মনে করেন, এ ধরনের মন্তব্য দলের ভাবমূর্তির জন্য ইতিবাচক নয়।
এসব প্রতিক্রিয়ার পর বুধবার বুলু তার বক্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন এবং এটি অনিচ্ছাকৃত বলে ব্যাখ্যা দেন। তবে তার দুঃখ প্রকাশের পরও বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক মহলে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে।