বাংলাদেশের তরুণ নেতৃত্বের নতুন রাজনৈতিক দল ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’ (এনসিপি) আগামীকাল শুক্রবার আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে। জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যৌথ উদ্যোগে গঠিত এই দলটির নাম ও শীর্ষ পদে মনোনীত নেতাদের নাম চূড়ান্ত হয়েছে। দলটির আহ্বায়ক পদে নাহিদ ইসলাম এবং সদস্যসচিব পদে আখতার হোসেনের নাম চূড়ান্ত হয়েছে। পাশাপাশি দলের প্রধান সমন্বয়কারী, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক এবং বিভিন্ন অঞ্চলের মুখ্য সংগঠক পদেও নাম ঘোষণা করা হয়েছে।
রবিবার বিকেলে রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে এই দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠান হবে, যেখানে দলটির শীর্ষ পদগুলোতে মনোনীত নেতাদের নাম ঘোষণা করা হবে। তবে পুরো কমিটি ঘোষণা করা হবে পরে। অনুষ্ঠানে দলের কার্যক্রমের বিস্তারিত তুলে ধরা হবে এবং এর উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য সম্পর্কে আলোচনা করা হবে।
নতুন দলের নেতৃত্বের গঠন নিয়ে বিশেষ করে কমিটি কেমন হবে এবং কত সংখ্যক সদস্য থাকবে তা নিয়ে অনেক আলোচনা চলছে। তবে জানা গেছে, নতুন দলের আহ্বায়ক কমিটিতে দুই প্রধান প্ল্যাটফর্ম—জাতীয় নাগরিক কমিটি এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে সমান সংখ্যক নেতাকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। জাতীয় নাগরিক কমিটি থেকে ৫০ শতাংশ এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে ৫০ শতাংশ নেতাকে দলের কমিটিতে জায়গা দেওয়া হবে। দলের শীর্ষ কর্মকর্তাদের মধ্যে বেশ কিছু নাম নিশ্চিত হলেও, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব পদে কারো নাম এখনও চূড়ান্ত করা হয়নি।
অন্যদিকে, দলটির প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের মধ্যে আলোচিত সাবেক শিবির নেতাদের নাম উল্লেখযোগ্যভাবে অনুপস্থিত রয়েছে। ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি আলী আহসান জোনায়েদ এবং অন্যান্য নেতাদের নাম উঠে আসলেও, তারা নতুন দল থেকে নিজেদের দূরে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এই তিন সাবেক শিবির নেতা নতুন দলটির অংশ না হলেও, একসময় শিবিরের সাথে যুক্ত ছিলেন এমন কিছু নেতা নতুন দলে স্থান পেয়েছেন।
নতুন দলের প্রস্তুতির জন্য বিভিন্ন উপকমিটি গঠন করা হয়েছে এবং দলের আত্মপ্রকাশের জন্য ঢাকা মহানগর পুলিশকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। যদিও প্রথমে পুরো কমিটি ঘোষণা করা হবে না, তবে শীর্ষ পদে মনোনীতদের নাম আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হবে।
দলের কার্যক্রমের জন্য নাগরিক কমিটির ভবিষ্যৎ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, এবং নাগরিক কমিটি কার্যক্রম চালিয়ে যাবে। তবে নতুন দল গঠনের পর থেকে নাগরিক কমিটি ‘সিভিল-পলিটিক্যাল’ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে থেকে যাবে এবং দল গঠনের আর কোনো উদ্যোগ নেবে না।
নতুন দলের প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তরুণদের মধ্যে নতুন রাজনৈতিক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে, এবং এটি ভবিষ্যতে বাংলাদেশের রাজনৈতিক চিত্রে এক নতুন রূপ নিয়ে আসতে পারে।