নানা কারণে বিশ্বের বিভিন্ন শহরে দিন দিন বায়ুদূষণ বাড়ছে। দীর্ঘদিন ধরে মেগাসিটি ঢাকা বায়ুদূষণের শীর্ষ শহরগুলোর মধ্যে অন্যতম। নতুন বছরের দ্বিতীয় দিনেও ঢাকার বায়ুর মান 'খুবই অস্বাস্থ্যকর' পর্যায়ে রয়েছে। আজকের এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) অনুযায়ী ঢাকার স্কোর ২১৭, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ।
বায়ুদূষণের কারণে ঢাকার বাসিন্দারা নানা স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছেন। বিশেষ করে শিশু, বৃদ্ধ এবং শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য এই দূষণ আরও বিপজ্জনক। দূষণের প্রভাবে শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি, হৃদরোগ এবং ফুসফুসের নানা রোগ বাড়ছে। চিকিৎসকরা বলছেন, দীর্ঘমেয়াদে এই দূষণ আরও জটিল স্বাস্থ্যসমস্যা তৈরি করতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ঢাকার বায়ুদূষণের প্রধান কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে যানবাহনের ধোঁয়া, নির্মাণকাজের ধুলা, শিল্পকারখানার বর্জ্য এবং ইটভাটার ধোঁয়া। শীতকালে বায়ুর গতি কম থাকায় দূষিত বায়ু আরও জমে থাকে, যা পরিস্থিতি আরও সংকটাপন্ন করে তোলে।
বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও তার কার্যকারিতা এখনও প্রশ্নবিদ্ধ। যানবাহনের ধোঁয়া কমাতে কড়াকড়ি আরোপ, নির্মাণকাজে ধুলা নিয়ন্ত্রণের নির্দেশনা এবং ইটভাটার আধুনিকায়নের মতো পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তবে এসব উদ্যোগের পরও দূষণের মাত্রা উদ্বেগজনক।
সাধারণ মানুষও বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখতে পারে। যানবাহনের অতিরিক্ত ব্যবহার এড়ানো, গাছপালা রোপণ ও সংরক্ষণ, এবং বর্জ্য সঠিকভাবে নিষ্পত্তি করা এই সংকট কমাতে সাহায্য করতে পারে। ব্যক্তিগত সুরক্ষার জন্য বাইরে বের হলে মাস্ক ব্যবহার এবং ঘরে বায়ু পরিশোধক ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
বায়ুদূষণ একটি জটিল সমস্যা, যার সমাধানে সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। পরিবেশ রক্ষা এবং জনস্বাস্থ্যের উন্নয়নে সরকার, প্রতিষ্ঠান এবং সাধারণ মানুষকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। সচেতনতা ও কার্যকর পদক্ষেপের মাধ্যমে দূষণ রোধ করা সম্ভব এবং ঢাকাকে একটি বাসযোগ্য শহরে রূপান্তর করা যেতে পারে।