নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা জনগণের অধিকার হলেও ড্রামে সংরক্ষিত ও বাজারজাত করা খোলা ভোজ্যতেল জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান)।
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) নিরাপদ খাদ্য দিবস উপলক্ষে প্রকাশিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে প্রজ্ঞা এই তথ্য জানায়। তারা উল্লেখ করেছে, ২ ফেব্রুয়ারি পালিত হবে জাতীয় নিরাপদ খাদ্য দিবস ২০২৫, যার প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘খাদ্য হোক নিরাপদ, সুস্থ থাকুক জনগণ’। প্রজ্ঞার মতে, আইন অনুযায়ী ভোজ্যতেল ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ না করে বাজারজাত করা নিষিদ্ধ হলেও ড্রামে বিক্রি হওয়া অধিকাংশ তেলে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ‘এ’ থাকে না বা একেবারেই অনুপস্থিত। এছাড়া, প্লাস্টিকের ড্রাম বারবার ব্যবহারের ফলে তেল বিষাক্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে এবং ভেজাল মেশানোর সুযোগও থাকে, যা এই খাতে বিদ্যমান আইনের কার্যকারিতা বাধাগ্রস্ত করছে।
জাতীয় মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট জরিপ ২০১১-১২ অনুযায়ী, দেশে ৬-৫৯ মাস বয়সী শিশুদের ২০.৫ শতাংশ এবং ১৫-৪৯ বছর বয়সী নারীদের (গর্ভবতী ও দুগ্ধদানকারী ব্যতীত) ৫.৪ শতাংশ ভিটামিন ‘এ’ ঘাটতিতে ভুগছে। আইসিডিডিআর,বি পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, বাজারের মোট ভোজ্যতেলের ৬৫ শতাংশই ড্রামে বিক্রি হয়, যার মধ্যে ৫৯ শতাংশে কোনো ভিটামিন ‘এ’ থাকে না এবং ৩৪ শতাংশে পর্যাপ্ত মাত্রায় নেই। মাত্র ৭ শতাংশ খোলা তেলেই আইনে নির্ধারিত ন্যূনতম মাত্রায় ভিটামিন ‘এ’ পাওয়া গেছে। তাছাড়া, এই ড্রামগুলোতে কোনো লেবেল বা উৎস সংক্রান্ত তথ্য না থাকায় এর সরবরাহ চ্যানেল শনাক্ত করা কঠিন, ফলে অপরাধীদের চিহ্নিত করাও সম্ভব হয় না।
জাতীয় নিরাপদ খাদ্য দিবস ২০২৫ উপলক্ষে প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের এক প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, "ভোজ্যতেল একটি গুরুত্বপূর্ণ খাদ্যপণ্য, যা নিরাপদভাবে ভোক্তার কাছে পৌঁছানোর দায়িত্ব সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সবার। ড্রামে খোলা ভোজ্যতেল বাজারজাতকরণ দ্রুত বন্ধ করতে হবে এবং এর ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করতে হবে।"