ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে আয়োজনের পরিকল্পনা করছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। জানুয়ারির মধ্যেই নির্বাচন আয়োজনের রোডম্যাপ প্রকাশের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। তবে নির্বাচন ঘিরে ছাত্র সংগঠনগুলির মধ্যে মতপার্থক্য এবং উত্তেজনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং ছাত্রশিবির ফেব্রুয়ারির মধ্যে ভোটের দাবি জানালেও ছাত্রদল এবং ছাত্র ইউনিয়ন তাদের অবস্থান থেকে নির্বাচন সংস্কারের পরেই ভোট আয়োজনের পক্ষপাতী।
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ডাকসু নির্বাচনের দাবি জোরালো হয়ে উঠেছে। ধারাবাহিক আন্দোলন এবং কার্যক্রমের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের প্রতি নির্বাচনের রোডম্যাপ চেয়ে আসছিল। এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও এ বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব প্রদর্শন করেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহম সোমবার (১৩ জানুয়ারি) সময় সংবাদকে জানান, "ফেব্রুয়ারির মধ্যে ডাকসু নির্বাচন আয়োজন একটি গ্রহণযোগ্য সময়, তবে নির্বাচন কার্যকরভাবে আয়োজন করতে হলে গঠনতন্ত্র সংস্কার করা জরুরি। এজন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।"
তবে ডাকসু নির্বাচন নিয়ে ছাত্র সংগঠনগুলির মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। ছাত্রদল এবং ছাত্র ইউনিয়ন গঠনতন্ত্র সংস্কারের পরেই নির্বাচন চায়। ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মাহির শাহরিয়ার রেজা বলেন, "ছাত্রলীগের সুবিধার্থে গঠনতন্ত্রে যে বিধান যোগ করা হয়েছিল, তার ভিত্তিতে নির্বাচন হলে তা প্রশ্নবিদ্ধ হবে।" ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র সাহা অভিযোগ করেন, "ফ্যাসিবাদের পৃষ্ঠপোষকরা এখনো হল পর্যায়ে অবস্থান করছে।"
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার বলেন, "আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ কেন্দ্রিক রাজনীতি শক্তিশালী হোক, নতুন করে ক্ষমতার রাজনীতি না হয়ে থাকুক।" ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি মহিউদ্দিন আহমেদ নির্বাচনের রোডম্যাপ দ্রুত প্রকাশের দাবি জানান এবং বলেন, "নির্বাচনের প্রক্রিয়া এবং গঠনতন্ত্র সংস্কার একসঙ্গে চলতে পারে।"
২০১৯ সালে দীর্ঘ ২৮ বছর পর ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল, তবে এরপর নির্বাচন আয়োজনে আর কোনো উদ্যোগ নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।