আগামী ২০ জানুয়ারি, ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে ফিরছেন এবং তাঁর শাসনভার পেতে যাচ্ছেন, যা বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের শাসনকাল শেষ হবে। তবে, ট্রাম্পের শাসনে আসন্ন সম্ভাব্য পরিবর্তন নিয়ে এশিয়ার মার্কিন মিত্ররা উদ্বিগ্ন। কারণ, ট্রাম্প এশিয়া মহাদেশের পরাশক্তিদের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে সন্দেহাতীতভাবে কঠোর নীতি গ্রহণ করেন।
এশিয়ার শক্তিশালী দেশগুলির মধ্যে চীন অন্যতম, যা বর্তমানে সামরিক এবং পারমাণবিক বাহিনীর আধুনিকীকরণে ব্যস্ত। চীন দক্ষিণ চীন সাগর এবং তাইওয়ান নিয়ে আঞ্চলিক দাবি করতে থাকলে, তা বৈশ্বিক রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর উত্তর কোরিয়া তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি বাড়ানোর পাশাপাশি রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কও গাঢ় করছে। এই দেশগুলির আক্রমণাত্মক ভাষণ এবং অবৈধ পারমাণবিক কর্মসূচির ফলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক শীতল অবস্থায় রয়েছে।
এদিকে, দক্ষিণ কোরিয়া এবং জাপান দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের নিকটতম মিত্র, আর এই অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি মার্কিন সেনাও অবস্থান করছে। ফিলিপাইন এবং অস্ট্রেলিয়াও যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তার উপর নির্ভরশীল। তবে, ভারত, যা এশিয়া–প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ শক্তি, চীন–ভারত আধিপত্য বিস্তারের লড়াইয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা কতটা সহ্য করবে সেটিও প্রশ্নসাপেক্ষ। বর্তমানে ভারতের সঙ্গে মার্কিন সম্পর্ক তিক্ত হলেও, ট্রাম্প প্রশাসন তার ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির মাধ্যমে এসব মিত্রদের উপর আরও চাপ প্রয়োগ করতে পারেন, যা ভারত এবং অন্য দেশগুলির জন্য অস্বস্তির কারণ হতে পারে।
ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তন এশীয় মিত্রদের জন্য আরও উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, কারণ তিনি মনে করেন, এসব দেশ তাদের প্রতিরক্ষা খাতে যথেষ্ট ব্যয় করছে না এবং কিছু দেশে স্বৈরশাসকদের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করছে। ট্রাম্প তাঁর “আমেরিকা ফার্স্ট” নীতি অনুযায়ী, এসব দেশের উপর চাপ প্রয়োগ করতে পারেন, বিশেষ করে প্রতিরক্ষা খাতে আরও বেশি ব্যয় করার জন্য। যদি এসব দেশ এই দাবি পূরণ করতে ব্যর্থ হয়, ট্রাম্প মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করতে পারেন।
এছাড়া, ট্রাম্পের পররাষ্ট্রনীতির দিকে তাকিয়ে, অনেকেই আশঙ্কা করছেন যে তিনি চীন, উত্তর কোরিয়া ও রাশিয়ার সঙ্গে এমন চুক্তিতে যেতে পারেন যা বর্তমান মার্কিন মিত্রদের স্বার্থ ক্ষুণ্ন করতে পারে। ট্রাম্পের এই সম্ভাব্য সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে, এশিয়ার নেতারা তার সঙ্গে সম্পর্ক মজবুত করতে চেষ্টা করছেন, কারণ ট্রাম্প পররাষ্ট্র সম্পর্কের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত সম্পর্কের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেন।
এভাবে, ট্রাম্পের পুনরায় ক্ষমতায় আসা এশীয় মিত্রদের জন্য এক নতুন ধরনের চ্যালেঞ্জ হতে পারে।