ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলের টানা ১৫ মাস ধরে চলা হামলায় নিহতের সংখ্যা ৪৬ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এই অমানবিক আক্রমণ এবং ধ্বংসযজ্ঞের জেরে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে ক্ষোভ বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার আগেই গাজায় যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে হোয়াইট হাউস।
শনিবার (১১ জানুয়ারি) বার্তাসংস্থা আনাদোলু জানিয়েছে, বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন গাজায় চলমান সংঘাত বন্ধে একটি চুক্তি সম্পন্ন করার ব্যাপারে আশাবাদী। হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জন কিরবি বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি যে এটি সম্ভব। কিন্তু এটি অর্জন করতে হলে কঠোর পরিশ্রম এবং সকল পক্ষের ছাড় দেওয়ার মানসিকতা প্রয়োজন।”
কিরবি আরও জানান, মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ব্রেট ম্যাকগার্ক দোহায় অবস্থান করছেন এবং তিনি যুদ্ধবিরতি চুক্তি ও বন্দি বিনিময়ের জন্য সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিরবি বলেন, “এই বিষয়টি পুরো জাতীয় নিরাপত্তা দলের মনোযোগের কেন্দ্রে রয়েছে। যুদ্ধবিরতি সম্পন্ন করা আমাদের দায়িত্ব। কারণ প্রতিটি দিন বন্দিদের জন্য শোক ও অনিশ্চয়তার দিন।”
চুক্তি নিয়ে আলোচনার জন্য কাতারের রাজধানী দোহায় কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতায় হামাস এবং ইসরায়েলের প্রতিনিধিদের মধ্যে পরোক্ষ আলোচনা চলছে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজায় বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, এবং গির্জাসহ অসংখ্য ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে। গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নিহতদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। আহতের সংখ্যা লক্ষাধিক।
স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও প্রায় ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ আটকা পড়ে আছেন। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের যুদ্ধবিরতির আহ্বান উপেক্ষা করে ইসরায়েল তার হামলা অব্যাহত রেখেছে। ইতোমধ্যেই ইসরায়েল আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগের সম্মুখীন হয়েছে।
হোয়াইট হাউস বলেছে, ট্রাম্পের দায়িত্ব নেওয়ার আগেই যুদ্ধবিরতির চুক্তি কার্যকর করার লক্ষ্য অর্জনে তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।