আফ্রিকার দেশ সোমালিয়ায় ইসলামিক স্টেট (আইএস) সংশ্লিষ্ট জ্যেষ্ঠ এক পরিকল্পনাকারীসহ কয়েকজন সন্ত্রাসীর ওপর বিমান হামলার নির্দেশ দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরই মধ্যে দেশটির উত্তরাঞ্চলের গোলিস পার্বত্য এলাকায় এই হামলা চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ।
ট্রাম্প এক্স-এ দেওয়া পোস্টে দাবি করেছেন, ‘এই হত্যাকারীরা গুহায় লুকিয়ে থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও আমাদের মিত্রদের হুমকি দিচ্ছিল। এই হামলার মাধ্যমে তাদের লুকিয়ে থাকার জায়গাগুলো ধ্বংস করা হয়েছে এবং বেসামরিক ক্ষয়ক্ষতি ছাড়াই অনেক সন্ত্রাসীকে হত্যা করা হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আইএস ও যারা আমেরিকানদের ওপর হামলা করতে চায়, তাদের জন্য এটি একটি স্পষ্ট বার্তা—আমরা আপনাদের খুঁজে বের করব এবং নির্মূল করব।’
সোমালিয়ার রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ও এক্স-এ দেওয়া এক পোস্টে জানিয়েছে, মার্কিন বিমান হামলায় দেশটির উত্তরাঞ্চলে আইএসের সিনিয়র নেতাদের লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। তবে হামলায় ঠিক কতজন নিহত হয়েছে বা কারা ছিল, সে বিষয়ে কোনো নির্দিষ্ট তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।
এদিকে, বিবিসি ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম হামলার সত্যতা বা ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি। তবে মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর জানিয়েছে, এই হামলায় বেশ কয়েকজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে, যদিও বেসামরিক জনগণের কোনো ক্ষতি হয়নি বলে দাবি করা হয়েছে।
সন্ত্রাসী সংগঠন আইএস ২০১৫ সালে সোমালিয়ায় তাদের শাখা গড়ে তোলে। এর আগে, আল-কায়েদার মিত্র আল-শাবাব গোষ্ঠীর কিছু বিদ্রোহী সদস্য এই সংগঠন থেকে বেরিয়ে এসে আইএসের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে। বর্তমানে সোমালিয়ায় আল-শাবাবই সবচেয়ে বড় জিহাদি গোষ্ঠী হিসেবে সক্রিয়, তবে আইএসও ধীরে ধীরে বিস্তার লাভ করছে।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইরাক ও সিরিয়ায় এক দশক ধরে শক্তিশালী অবস্থান গড়ে তুলেছিল আইএস। কিন্তু সেখানে তারা মারাত্মকভাবে পরাজিত হওয়ার পর সংগঠনটি আফ্রিকা মহাদেশের বিভিন্ন অংশে নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করার চেষ্টা করছে। সোমালিয়ার মতো যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশগুলোতে তাদের উপস্থিতি ক্রমশ বাড়ছে, যা আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার জন্য নতুন উদ্বেগ সৃষ্টি করছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের এই সামরিক পদক্ষেপ মূলত যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা রক্ষার পাশাপাশি আফ্রিকায় আইএসের বিস্তার ঠেকানোর একটি প্রচেষ্টা। তবে এই ধরনের বিমান হামলা কতটা কার্যকর হবে এবং এটি সোমালিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে কী ধরনের প্রভাব ফেলবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়।