ট্রাম্পের নাগরিকত্ব নির্দেশ অসাংবিধানিক, সিয়াটেলের আদালতের সাময়িক স্থগিতাদেশ
আমেরিকায় জন্মগত নাগরিকত্ব পাওয়ার প্রচলিত নিয়মে পরিবর্তন আনতে চাওয়া প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশকে অসাংবিধানিক বলে রায় দিয়েছেন সিয়াটেলের একটি আদালত। বিচারক জন কাফেনর ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের ওপর সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন, যা দেশটির সংবিধান এবং ১৯৫২ সালের অভিবাসন ও জাতীয়তা আইনের বিরোধী হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
ট্রাম্প তার ক্ষমতায় প্রথম দিনেই একটি নির্দেশনামায় স্বাক্ষর করেন, যেখানে বলা হয়, আমেরিকায় জন্ম নেওয়া শিশু তখনই নাগরিকত্ব পাবে, যদি তার বাবা-মা উভয়েই আমেরিকার স্থায়ী বাসিন্দা হন। এর ফলে যারা আমেরিকায় জন্মগ্রহণ করলেও বাবা-মায়ের কেউ স্থায়ী বাসিন্দা নন, তারা নাগরিকত্বের সুযোগ হারাবে। ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে এই নিয়ম কার্যকর করার কথা থাকলেও আদালতের রায় আপাতত তা স্থগিত করেছে।
ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের কারণে আমেরিকায় বসবাসরত বহু ভারতীয় পরিবারসহ অভিবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যে তীব্র উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। অনেক অন্তঃসত্ত্বা মা সময়ের আগেই সন্তানের জন্ম দিতে হাসপাতালে ভিড় করছেন, যাতে পুরোনো নিয়মে তাদের সন্তান নাগরিকত্ব পেতে পারে।
এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে আদালতে একাধিক মামলা হয়েছে। আদালতে যুক্তি দেখানো হয়, ১৮৬৮ সালে সংবিধানের ১৪তম সংশোধনী এবং ১৯৫২ সালের অভিবাসন আইন অনুযায়ী আমেরিকায় জন্মগ্রহণ করলেই নাগরিকত্ব পাওয়ার অধিকার রয়েছে। ট্রাম্পের নির্দেশ এই আইনের সরাসরি লঙ্ঘন বলে মন্তব্য করেছেন বিরোধী পক্ষের আইনজীবীরা।
ডেমোক্র্যাটিক শাসিত প্রদেশগুলোও ট্রাম্পের পদক্ষেপের কঠোর সমালোচনা করেছে। তাদের মতে, এই নিয়ম কার্যকর হলে প্রতি বছর দেড় লক্ষাধিক শিশু তাদের জন্মগত নাগরিকত্ব হারাবে। বিচারক কাফেনর ট্রাম্পের সিদ্ধান্তকে “স্পষ্টতই অসাংবিধানিক” উল্লেখ করে বলেন, এই নির্দেশ সংবিধানের মৌলিক অধিকারকে উপেক্ষা করে।
ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত শুধু অভিবাসীদেরই নয়, বরং আমেরিকার অভিবাসন নীতির ভিত্তিকেও প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। সাময়িক স্থগিতাদেশের পর এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য দেশটির উচ্চ আদালতের দিকে তাকিয়ে রয়েছে সবাই।