টেকনাফ-তেতুলিয়া অর্থনৈতিক করিডোর প্রকল্পে পরিবেশ সুরক্ষা জরুরি: ড. ইউনূস
উন্নয়ন প্রকল্প পরিকল্পনার সময় নদীর পানিপ্রবাহ যাতে কখনো বন্ধ না হয় তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বুধবার যমুনা রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবনে ‘টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া সমন্বিত অর্থনৈতিক করিডোর উন্নয়ন’ প্রকল্প নিয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের তিনি এ নির্দেশনা দেন।
বৈঠকে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের বাংলাদেশ কান্ট্রি ডিরেক্টর হো ইউন জোং এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) কর্মকর্তারা প্রকল্পের বিস্তারিত রূপকল্প, কৌশল ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া উপস্থাপন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, এসডিজি–বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ ও মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া।
প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস তিনটি বিষয়ের ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন। প্রথমত, বাংলাদেশের জলপ্রবাহকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে এবং কোনো উন্নয়ন প্রকল্প যেন নদীর পানিপ্রবাহকে বাধাগ্রস্ত না করে। তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ একটি নদী-দ্বীপ দেশ, তাই পানিপ্রবাহ রক্ষা করা অতীব জরুরি।
দ্বিতীয়ত, যেকোনো প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় সংশ্লিষ্ট এলাকার জনসংখ্যা ও ভূ-প্রকৃতির বিবেচনা থাকা উচিত। কারণ বাংলাদেশ বন্যাপ্রবণ দেশ, পানিপ্রবাহ বন্ধ করলে বন্যা পরিস্থিতি আরও তীব্র হতে পারে। তিনি বলেন, বন্যার সময় জনগণ উঁচু রাস্তা, সেতু ও রেলপথে আশ্রয় নেয়; তাই সেতু নির্মাণ শুধু পর্যাপ্ত নয়, সেটি আশ্রয় হিসেবে কাজ করছে কি না সেটাও মূল্যায়ন করতে হবে।
তৃতীয়ত, আন্তর্জাতিক সংযোগের ওপর জোর দিয়ে ড. ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ এ অঞ্চলে একটি বিনিয়োগ কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে চায়। সেজন্য প্রকল্পগুলো এমন হওয়া উচিত যা নেপাল, ভুটানসহ প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করবে। তিনি পানি বিশেষজ্ঞদের অন্তর্ভুক্তি ও মাস্টারপ্ল্যান তৈরির নির্দেশ দেন।
সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, আগে হাওর এলাকায় নির্মিত একটি বিশাল সড়ক ওই অঞ্চলের ইকোসিস্টেম ধ্বংস করেছে এবং মানুষের বন্যার শিকার হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তাই যে কোনো উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের সময় পরিবেশকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা আবশ্যক।