‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ নিয়ে দেশব্যাপী পাঁচ দিনের জনসংযোগ শুরু কাল
‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ নিয়ে জনসাধারণের মতামত সংগ্রহে পাঁচ দিনের জনসংযোগ কর্মসূচি শুরু করতে যাচ্ছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি। আগামীকাল সোমবার থেকে শুরু হয়ে এই কর্মসূচি চলবে ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত। সংগঠনটি গতকাল শনিবার এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে কর্মসূচির বিস্তারিত তুলে ধরে। এতে জানানো হয়, জনসংযোগ কর্মসূচির অংশ হিসেবে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে লিফলেট বিতরণ, সমাবেশ এবং সরাসরি মতবিনিময় করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, “জুলাই ঘোষণাপত্র বাংলাদেশের জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে পারে। এটি আমাদের জাতীয় জীবনে একটি ঐতিহাসিক দলিল হয়ে থাকবে।” তিনি আরও জানান, ৬ থেকে ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত সারাদেশে কর্মসূচি পালিত হবে। এই সময় তারা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে জনসংযোগের মাধ্যমে মানুষের মতামত নেবেন।
হাসনাত আব্দুল্লাহ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকার এই ঘোষণাপত্র তৈরির উদ্যোগ নেবে বলে জানিয়েছিল। কিন্তু এ বিষয়ে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি হয়নি। আমাদের প্রত্যাশা, সরকার সব অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত কাজ শুরু করবে। আমরা সরকারকে এই বিষয়ে সব ধরনের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।”
সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসিরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, “ঘোষণাপত্র প্রণয়নে সরকারের উদাসীনতা দুঃখজনক। সরকার অবিলম্বে এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।” তিনি জানান, রাজনৈতিক দলগুলো ঘোষণাপত্র তৈরির কাজে ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছে। সকলের মতামতের ভিত্তিতে একটি সবার জন্য গ্রহণযোগ্য দলিল প্রণয়ন করা সম্ভব।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের শেষ দিনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ কর্মসূচিতে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশের ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। এই কর্মসূচি দেশের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে একত্রিত করেছিল। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ এবং পুরোনো রাজনৈতিক ব্যবস্থার সমালোচনা করে এটি নতুন বাংলাদেশের স্বপ্নকে ধারণ করার দাবি তোলে।
এখনো পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি। এর মধ্যে ছাত্র আন্দোলন ও নাগরিক কমিটি জনগণের মতামত নিয়ে তাদের দাবিকে আরও জোরালো করতে মাঠে নামছে। আন্দোলনের নেতারা আশা করছেন, এই ঘোষণাপত্র দেশে গণতন্ত্র ও সামাজিক ন্যায্যতার জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।
এই কর্মসূচি দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।