জুলাই আন্দোলন নিয়ে জাতিসংঘের তদন্ত প্রতিবেদন ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত হবে
বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে সংঘটিত জুলাই-অগাস্টের আন্দোলন ও সহিংসতা নিয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের তদন্ত প্রতিবেদন ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশ করা হবে। বুধবার (২৩ জানুয়ারি) সুইজারল্যান্ডের দাভোসে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের সম্মেলনের ফাঁকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান কমিশনার ভলকার তুর্ক এ তথ্য জানান।
জাতিসংঘের জেনেভা কার্যালয় থেকে প্রতিবেদনটি প্রকাশের আগে এটি বাংলাদেশের সঙ্গে শেয়ার করা হবে বলে জানিয়েছেন ভলকার তুর্ক। বৈঠকে তিনি বলেন, প্রতিবেদনটি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে এবং এটি মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার দায় নির্ধারণ ও প্রতিরোধে কার্যকর সুপারিশ করবে।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনকে এই তদন্ত পরিচালনার জন্য ধন্যবাদ জানান। তিনি উল্লেখ করেন, আন্দোলনকালে সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলো তদন্ত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইউনূস বলেন, জাতিসংঘের এমন উদ্যোগ বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি উন্নত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
জুলাই-অগাস্টের এই আন্দোলনের সময় কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীরা দেশব্যাপী আন্দোলনে নামেন। এরপর সরকার বিরোধী আন্দোলন রূপ নেয়। এ সময় সহিংসতার ঘটনাগুলো নিয়ে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং দল তদন্ত করে। দলটি ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ, অপরাধের দায়, এবং এর কারণ চিহ্নিত করার পাশাপাশি ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সুপারিশ তৈরি করছে।
জাতিসংঘের এই প্রতিবেদনের পাশাপাশি ছয়টি স্বাধীন সংস্কার কমিশনের রিপোর্টও একই সময় প্রকাশিত হবে। এসব রিপোর্টে আন্দোলন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দিক, আইনি সংস্কার, এবং প্রশাসনিক জটিলতার কারণ নিয়ে বিশদ আলোচনা থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এ সময় বৈঠকে রোহিঙ্গা সংকট নিয়েও আলোচনা হয়। রোহিঙ্গাদের দুর্দশা নিরসনে জাতিসংঘের সহায়তা চান ড. ইউনূস। ভলকার তুর্ক এ বিষয়ে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতসহ সংশ্লিষ্ট অংশীদারদের সঙ্গে আলোচনা করার প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি জানান, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে মানবিক পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
জাতিসংঘের এমন উদ্যোগ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নজর ফেরাবে এবং মানবাধিকার রক্ষায় বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উন্নত করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।