জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বেগম খালেদা জিয়া ও সব আসামি খালাস
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিচারিক আদালত ও হাইকোর্টের দেওয়া রায় বাতিল করে আপিল বিভাগ খালাসের রায় ঘোষণা করেছে। এর মাধ্যমে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও মামলার অন্য পাঁচ আসামি চূড়ান্তভাবে দণ্ডমুক্ত হলেন। বুধবার প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বেঞ্চ সর্বসম্মতিক্রমে এ রায় দেন। আদালত তাদের পর্যবেক্ষণে উল্লেখ করেন, এই মামলা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে প্রভাবিত হয়ে করা হয়েছিল।
খালাস পাওয়ার পর বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা এ রায়কে ন্যায়বিচারের জয় বলে আখ্যা দেন। তারা আদালতে যুক্তি দেন যে, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের নামে যে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছিল, তা প্রকৃতপক্ষে সুরক্ষিত ছিল এবং কোনো বেআইনি কর্মকাণ্ড ঘটেনি। মামলার মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে রাজনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করার চেষ্টা করা হয়েছিল বলে দাবি করেন তারা। অপরদিকে মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে তারেক রহমান, সাবেক মুখ্যসচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, এবং ব্যবসায়ী মমিনুর রহমান পলাতক ছিলেন, তবুও তাদেরও খালাস দেওয়া হয়েছে।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত ৫ খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড এবং অপর পাঁচ আসামিকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, অরফানেজ ট্রাস্টের নামে ২ কোটি ১০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। ওই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন খালেদা জিয়া। পরে ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর হাইকোর্ট তার সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করেন। এ রায়ের বিরুদ্ধেও আপিল করেন তিনি।
দীর্ঘ বিচারপ্রক্রিয়ার শেষে আপিল বিভাগের এ রায় তার জন্য বড় রাজনৈতিক বিজয় হিসেবে দেখা হচ্ছে। আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই রায়ের মাধ্যমে খালেদা জিয়ার প্রতি দায়ের হওয়া এ মামলার আইনগত জটিলতার অবসান হলো। বিএনপি নেতারা বলছেন, এ রায় শুধু ন্যায়বিচারের উদাহরণ নয়, বরং সরকারের দায়ের করা রাজনৈতিক মামলাগুলোর প্রকৃত চেহারা উন্মোচিত করেছে।
রায়ের পর বিএনপি এবং এর সমর্থকরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছে। অনেকেই এটিকে দলের নতুন শক্তি অর্জনের মাইলফলক বলে মনে করছেন। তবে এ রায়ের মাধ্যমে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন সমীকরণ তৈরি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।