বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান দাবি করেছেন, আওয়ামী লীগ কোনো রাজনৈতিক দল নয়, বরং এটি একটি “খুনের সিন্ডিকেট চক্র”। তিনি অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ বরাবরই দেশে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পাঁয়তারা চালিয়েছে এবং জামায়াতের নেতাকর্মীদের ওপর সবচেয়ে বেশি নির্যাতন চালিয়েছে।
মঙ্গলবার বরিশালের হেমায়েত উদ্দিন ঈদগাহ ময়দানে মহানগর ও জেলা জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “আগে জুলাই-আগস্ট মাসের গণহত্যার বিচার হোক, তারপর আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রশ্ন। আমরা চাই, যেসব ব্যক্তি ও দল এই গণহত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত, তাদের বিচার হোক। শেখ হাসিনাকে যদি সত্যিই দেশপ্রেমিক বলা হয়, তবে গণহত্যার জন্য নিজেই বিচার মোকাবিলা করুন।”
তিনি আরও দাবি করেন, স্বাধীনতার পর থেকে আওয়ামী লীগ জাতিকে বিভক্ত করে রেখেছে। “তারা দেশকে টুকরো টুকরো করে বিভেদ তৈরি করেছে। ১৯৭১ সালের যুদ্ধক্ষেত্রে অনেকেই প্রাণ দিয়েছেন, কিন্তু এরকম বুক পেতে জীবন দেওয়ার ঘটনা বিরল। আবু সাঈদ মুক্তির মহানায়ক। হাজার হাজার মানুষ পঙ্গু হয়ে বেঁচে আছেন; তারা এখন জিন্দা শহিদ।”
জামায়াত আমির বলেন, “আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থেকে অন্যায়ভাবে আমাদের ওপর মিথ্যা মামলা দিয়েছে এবং জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার চেষ্টা করেছে। অথচ জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার চার দিন পর নিজেরাই নিষিদ্ধ হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “আমরা এই গণহত্যা ও নির্যাতনের বিচারের দাবিতে লড়াই চালিয়ে যাব। আমাদের নেতাদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসি দেওয়া হয়েছে, অথচ তারা নিজেরাই প্রকাশ্যে গণহত্যা করেছে। জনগণ সব দেখছে।”
কর্মী সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, মাওলানা আবদুল হালিম, এবং এডভোকেট মুয়াযযম হোসাইন হেলাল। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহিদ ফয়সাল আহমেদ শান্তর বাবা জাকির হোসেন ও সনাতনী ধর্মের প্রতিনিধিত্বে বক্তব্য রাখেন অসিম কুমার হালদার।
সভায় বক্তারা দাবি করেন, আওয়ামী লীগ শুধু জামায়াত নয়, বরং পুরো জাতিকে নিপীড়নের শিকার করছে। তারা জনগণকে আহ্বান জানান, এ ধরনের নিপীড়নের বিরুদ্ধে একতাবদ্ধ হতে। বক্তব্যের মাধ্যমে তারা দলীয় নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার নির্দেশনা দেন এবং গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার আহ্বান জানান।