দীর্ঘ আয়ুষ্কালের জন্য জাপানিরা সুপরিচিত, এবং তাদের মধ্যে রোগবালাই তুলনামূলকভাবে কম দেখা যায়। ওসাকা মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির গবেষকরা জানিয়েছেন, জাপানের ঐতিহ্যবাহী খাবারে প্রচুর পরিমাণে থাকা নিউক্লিক অ্যাসিড ক্যানসার কোষের বৃদ্ধি রোধ করতে পারে। হোল গ্রেইন, সামুদ্রিক খাবার ও উদ্ভিজ্জ উপাদানে সমৃদ্ধ জাপানি খাদ্যাভ্যাস ক্যানসারসহ নির্দিষ্ট কিছু রোগ প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।
নিউক্লিক অ্যাসিড হলো এক ধরনের প্রাকৃতিক যৌগ, যা খাদ্যসহ সমস্ত জীবন্ত বস্তুতে পাওয়া যায়। এটি শরীরে ভেঙে নিউক্লিওটাইড ও নিউক্লিওসাইড তৈরি করে, যা কোষের কার্যকারিতা এবং ইমিউন সিস্টেমের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। অধ্যাপক কোজিমা-ইউয়াসার গবেষণা বলছে, নিউক্লিক অ্যাসিড ভাঙার ফলে ক্যানসার কোষের বৃদ্ধি থেমে যেতে পারে। বিশেষ করে স্যামন মাছ, উদ্ভিজ্জ উপাদান এবং নির্দিষ্ট ধরনের খামিরে নিউক্লিক অ্যাসিডের উচ্চ উপস্থিতি রয়েছে, যা ক্যানসার কোষ দমনে ভূমিকা রাখে।
গবেষণায় বিজ্ঞানীরা বিশেষ দুটি উৎস থেকে নিউক্লিক অ্যাসিড সংগ্রহ করেছেন—স্যামন মিল্ট (সালমনের শুক্রাণু) এবং টরুলা ইস্ট (একটি পুষ্টি সমৃদ্ধ খামির, যা স্বাদ বৃদ্ধিতে ব্যবহৃত হয়)। ল্যাব পরীক্ষায় দেখা গেছে, টরুলা ইস্ট থেকে প্রাপ্ত আরএনএ এবং স্যামন মিল্ট থেকে প্রাপ্ত ডিএনএ ক্যানসার কোষের বৃদ্ধিকে বাধা দিতে পারে। গবেষকরা জানান, এগুলো গুয়ানোসিন নামে এক ধরনের যৌগ তৈরি করে, যা ক্যানসার কোষের প্রতিলিপি তৈরি হওয়া রোধ করে।
গুয়ানোসিন হলো এক ধরনের নিউক্লিওসাইড, যা ক্যানসার কোষের বৃদ্ধি থামানোর ক্ষমতা রাখে। যদিও গবেষণাটি এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে, তবে গবেষকদের মতে, গুয়ানোসিনের খাদ্য উৎস ও সংশ্লিষ্ট রাসায়নিক উপাদান ভবিষ্যতে ক্যানসার প্রতিরোধের একটি সম্ভাব্য উপায় হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে।
তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া