জাতীয় ঐক্যের ডাক দেবেন ড. ইউনূস
জাতীয় ঐক্যের ডাক দেওয়ার উদ্যোগ নিচ্ছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এর অংশ হিসেবে গতকাল মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) তিনি ১৯৮০-এর দশকের ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। আজ বুধবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এবং আগামীকাল বৃহস্পতিবার ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করার পরিকল্পনা রয়েছে তার। এ বিষয়ে ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে এক ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সাংবাদিকদের বিস্তারিত জানান।
প্রধান উপদেষ্টা রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করেছেন। ছাত্রনেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ বৈঠক শেষে জানান, বৈঠকে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কার প্রস্তাব, এবং সীমান্তে হত্যা ও ভারত সরকারের সঙ্গে গোপন চুক্তি সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তারা বিশেষ করে সীমান্তে ফেলানীসহ সকল হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবি জানান।
প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, আজ বুধবার বিকেলে ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক হবে। এতে কোন দলগুলো অংশ নেবে, তা এখনও পরিষ্কার নয়। তবে বৈঠকের মূল লক্ষ্য থাকবে জাতীয় ঐক্যের ডাক দেওয়া। এছাড়া, আগামীকাল বৃহস্পতিবার ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে একটি বৈঠক আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে।
জাতীয় ঐক্যের বিষয়ে প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা নিয়ে দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে অপতথ্য ছড়ানো হচ্ছে, যা দেশের ভাবমূর্তির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। তিনি বলেন, “আমাদের জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলে এ ধরনের অপপ্রচার মোকাবিলা করতে হবে।”
প্রেস সচিব জানান, ভারতীয় গণমাধ্যমের অপপ্রচারের কারণে আগরতলায় বাংলাদেশের মিশনে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসব অপতথ্যের জবাব দিতে বাংলাদেশের গণমাধ্যমকে সক্রিয় ভূমিকা পালন করার আহ্বান জানানো হয়েছে। তিনি বলেন, “আমরা ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক চাই, তবে তা হতে হবে ন্যায্যতা ও সমতার ভিত্তিতে।”
প্রেস সচিব জানান, বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোকেও দেশের পরিস্থিতি সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করার আমন্ত্রণ জানিয়েছে। এতে দেশের স্বচ্ছতা প্রমাণ হবে এবং অপতথ্যের মোকাবিলায় কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া যাবে।
প্রেস সচিব শেভরনের ভাইস প্রেসিডেন্টের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকের বিষয়টি উল্লেখ করেন। বৈঠকে শেভরন বাংলাদেশে গ্যাসক্ষেত্রের নতুন কূপ খননের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে। বাংলাদেশে গ্যাসের চাহিদা বাড়ার কারণে এ বিনিয়োগ দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
ড. ইউনূসের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যের এই উদ্যোগ দেশের বর্তমান সংকট মোকাবিলায় নতুন দিশা দেখাতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।