বিএনপি নেতা ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর গুরুতর অসুস্থ হয়ে দুবাইয়ের একটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। পবিত্র ওমরাহ পালনের উদ্দেশ্যে ঢাকা থেকে মদিনা যাওয়ার পথে বিমানে হঠাৎ শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা দেখা দিলে তাকে দুবাইয়ে জরুরিভাবে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
শুক্রবার সকালে গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার একান্ত সহকারী মির্জা হায়দার আলী। তিনি জানান, ঢাকা থেকে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে মদিনার উদ্দেশে যাত্রাকালে বাবর হঠাৎ শ্বাসকষ্টে ভুগতে থাকেন। দুবাইয়ে অবতরণের পর বিমানবন্দরের নিকটবর্তী একটি ক্লিনিকে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তাকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করার পরামর্শ দেন। বর্তমানে তিনি দুবাইয়ের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন এবং তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
বাবরের বড় ছেলে লাবিব ইবনে জামান তার পাশে রয়েছেন এবং তার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে নিয়মিত খোঁজখবর রাখছেন। পরিবারের পক্ষ থেকে দেশবাসী এবং দলের নেতাকর্মীদের কাছে তার আশু সুস্থতার জন্য দোয়া চাওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় এমিরেটস এয়ারলাইন্সের বিমানে বাবর তার বড় ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে মদিনার উদ্দেশে যাত্রা করেন। এর কয়েক ঘণ্টা আগেই আরেকটি ফ্লাইটে বাবরের সহধর্মিণীসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা মদিনার উদ্দেশে রওনা দেন। তারা মদিনায় পৌঁছানোর পর জানতে পারেন, বাবর অসুস্থ হয়ে দুবাইয়ে একটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
পরিবারের পরিকল্পনা অনুযায়ী, বাবরের পবিত্র ওমরাহ পালনের জন্য প্রথমে মদিনায় যাওয়ার কথা ছিল, এরপর সেখান থেকে মক্কায় গিয়ে ওমরাহ সম্পন্ন করার কথা ছিল। তবে তার আকস্মিক অসুস্থতার কারণে এই পরিকল্পনায় পরিবর্তন আসতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, দীর্ঘ ১৭ বছর কারাভোগের পর চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি সব মামলা থেকে খালাস পেয়ে মুক্তি পান লুৎফুজ্জামান বাবর। মুক্তির কয়েকদিন পর, ২০ জানুয়ারি বুকের ব্যথা অনুভব করলে তাকে গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে কয়েকদিন সিসিইউতে চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে ছিলেন তিনি।
সাম্প্রতিক অসুস্থতার পরিপ্রেক্ষিতে চিকিৎসকরা তার শারীরিক অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বাবরের শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা আগেও ছিল, তবে বিমানে হঠাৎ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ায় চিকিৎসকরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়েছেন।
বাবরের অসুস্থতার খবরে বিএনপির নেতাকর্মীরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। দলটির একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা বলেছেন, বাবর দীর্ঘদিন কারাগারে থাকার কারণে তার স্বাস্থ্যের অবনতি হয়েছে। মুক্তির পর থেকেই তিনি নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন।
বাবরের পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলে তাকে আবার মদিনায় নিয়ে যাওয়া হবে এবং সেখানে তিনি পরিবারের সঙ্গে ওমরাহ পালনের পরিকল্পনা করবেন। তবে এখনই এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি, সবকিছু নির্ভর করছে চিকিৎসকদের পরামর্শের ওপর।
এদিকে, বাবরের দ্রুত সুস্থতার জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে দলীয় নেতাকর্মী ও দেশবাসীর কাছে দোয়া চাওয়া হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকেও তার আশু আরোগ্যের জন্য সকলের দোয়া কামনা করা হয়েছে।