গাজা উপত্যকার ধ্বংসস্তূপ থেকে আরও ৬ ফিলিস্তিনির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, যা ভয়াবহ মানবিক সংকটকে আরও প্রকট করে তুলছে। এ নিয়ে ইসরায়েলের টানা হামলায় গাজার নিহতের সংখ্যা ৪৮ হাজার ৩০০ ছাড়িয়েছে। অন্যদিকে, রাফায় ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে আরও দুই ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। পাশাপাশি অধিকৃত পশ্চিম তীরে জাতিসংঘ পরিচালিত তিনটি স্কুল এবং একটি বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আনাদোলু ও আল জাজিরার প্রতিবেদনে জানা গেছে, গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার নিশ্চিত করেছে যে, ২০২৩ সালের অক্টোবরে শুরু হওয়া ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা ৪৮ হাজার ২৯১-এ পৌঁছেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি গোলাবর্ষণে আরও একজন ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন, যা সাম্প্রতিক মৃত্যুর সংখ্যায় যুক্ত হয়েছে। আহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১১ হাজার ৭২২ জনে।
স্বাস্থ্যকর্মী ও উদ্ধারকর্মীরা জানিয়েছেন, ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও বহু মরদেহ পড়ে রয়েছে। রাস্তায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা লাশগুলোর কাছে পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না, যা পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ করে তুলছে। দীর্ঘ ১৫ মাস পর গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও এখনও সেখানে ধ্বংসস্তূপের নিচে লাশ উদ্ধারের কাজ চলছে।
অন্যদিকে, আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ গাজার রাফায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় দুই ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। একই সঙ্গে অধিকৃত পশ্চিম তীরে জাতিসংঘ পরিচালিত তিনটি স্কুল ও একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে হামলা চালানো হয়েছে।
এদিকে, ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডিয়ন সার জানিয়েছেন, যুদ্ধবিরতি চুক্তির দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে আলোচনার জন্য এই সপ্তাহে বৈঠক হতে পারে। হামাসের সঙ্গে বন্দি বিনিময়ের আলোচনার অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার চারজন বন্দির মৃতদেহ হস্তান্তর এবং শনিবার ছয়জন জীবিত বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হতে পারে বলে জানা গেছে।
যদিও গত ১৯ জানুয়ারি থেকে তিন ধাপে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে, তবে গাজায় এখনও প্রাণহানি অব্যাহত রয়েছে। ইসরায়েলি বাহিনীর ক্রমাগত হামলা ও নিষ্ঠুর দমন-পীড়নের ফলে মানবিক বিপর্যয় তীব্রতর হচ্ছে।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, ইসরায়েলের অবিরাম আগ্রাসনের ফলে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে ইতোমধ্যে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। তবে এই ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যেও গাজার মানুষের দুর্ভোগ যেন শেষ হওয়ার নয়।