গাজাবাসীদের সরানোর কথা হলে ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করবেন না সিসি
মিসরের প্রেসিডেন্ট আব্দেল ফাত্তাহ এল-সিসি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করবেন না, যদি আলোচনার এজেন্ডায় গাজাবাসীদের তাদের জন্মভূমি থেকে সরানোর পরিকল্পনা থাকে। বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) মিসরের দুই শীর্ষ কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন।
গত ১ ফেব্রুয়ারি ট্রাম্পের সঙ্গে এক টেলিফোন আলাপে সিসিকে হোয়াইট হাউজে আমন্ত্রণ জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তবে মিসরের প্রেসিডেন্টের দপ্তর জানিয়েছে, বৈঠকের কোনো নির্ধারিত তারিখ এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
সম্প্রতি ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন যে, গাজা উপত্যকা দখল করে সেখানে নতুন ইসরায়েলি বসতি স্থাপন করা হবে এবং ফিলিস্তিনিদের মিসর বা জর্ডানে সরিয়ে নেওয়া হবে। তবে এই পরিকল্পনা নিয়ে ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক সমালোচনা তৈরি হয়েছে, এবং মিসর ও জর্ডান দুটো দেশই এই প্রস্তাব সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে।
ট্রাম্প বলেন,
“না, ফিলিস্তিনিরা আর গাজায় ফিরতে পারবে না, কারণ তাদের জন্য আরও ভালো আবাসন থাকবে। আমি তাদের জন্য স্থায়ীভাবে নতুন জায়গা তৈরির ব্যাপারে কথা বলছি।”
তিনি আরও বলেন,
“আমি গাজার ২৩ লাখ বাসিন্দার জন্য পাঁচ থেকে ছয়টি সুন্দর ও নিরাপদ কমিউনিটি তৈরি করব, তবে এগুলো হবে গাজার বাইরে। কারণ গাজা এখন বাসযোগ্য নয়, সেখানে জীবনযাপন ঝুঁকিপূর্ণ।”
ট্রাম্পের মতে, এই পরিকল্পনায় বড় ধরনের অর্থ খরচ হবে না এবং ভবিষ্যতে এটি একটি লাভজনক রিয়েল এস্টেট প্রকল্প হিসেবে গড়ে উঠতে পারে।
ট্রাম্পের এই প্রস্তাবে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে মিসর। প্রেসিডেন্ট সিসি স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, গাজার বাসিন্দাদের তাদের ভূমি থেকে সরানোর প্রস্তাব মিসর কোনোভাবেই সমর্থন করবে না। এমনকি এই বিষয়টি আলোচনার জন্য উত্থাপিত হলে তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করবেন না।
চলতি মাসের শুরুতে দখলদার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু যুক্তরাষ্ট্র সফরে গেলে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে ট্রাম্প বলেন,
“আমরা গাজা দখল করব এবং সেখানে নতুন বসতি গড়ে তুলব।”
তার এই ঘোষণায় বিশ্বজুড়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। অনেক বিশেষজ্ঞ এবং মানবাধিকার সংগঠন এই পরিকল্পনাকে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন এবং গণউচ্ছেদের চেষ্টা হিসেবে দেখছেন।
ট্রাম্পের ঘোষণার পর মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। মিসর ও জর্ডান ছাড়াও বেশ কয়েকটি মুসলিম দেশ এই পরিকল্পনার নিন্দা জানিয়েছে।
ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষও ট্রাম্পের প্রস্তাবকে সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য বলে উল্লেখ করেছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এই পরিকল্পনার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।