গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার মণ্ডলেরহাট এলাকায় একটি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের ছয়জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। ঘটনার পর পুলিশ তিনজনকে আটক করেছে, যাদের মধ্যে আওয়ামী লীগের দুই স্থানীয় নেতা নাজমুল ও মঞ্জুরুল ইসলাম রয়েছেন।
ঘটনার বিবরণ
ঘটনাটি ঘটেছে গত শনিবার (১২ মার্চ) রাতে। স্থানীয় সূত্র জানায়, ছাপড়হাটি ইউনিয়নের বিএনপি সদস্য শফিকুল ইসলাম মোটরসাইকেল নিয়ে যাওয়ার সময় ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক নেতা বাবুর ওষুধের দোকানের সামনে রাখা একটি বেঞ্চে ধাক্কা দেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শফিকুল ও বাবুর মধ্যে প্রথমে কথা কাটাকাটি হয়। কথা কাটাকাটি দ্রুত উত্তপ্ত বাগবিতণ্ডায় রূপ নেয়, যা শেষ পর্যন্ত সংঘর্ষে গড়ায়।
স্থানীয়রা জানান, প্রথমে আওয়ামী লীগের কিছু নেতাকর্মী শফিকুল ইসলামের ওপর হামলা চালান। খবর পেয়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা শফিকুলকে উদ্ধার করতে এগিয়ে এলে তাদের ওপরও হামলা করা হয়। এই হামলায় ছয়জন বিএনপি নেতাকর্মী আহত হন। আহতদের মধ্যে গোলাম কিবরিয়া মির্জা নামের একজন নেতার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আহতদের পরিচয়
আহত ব্যক্তিরা হলেন:
আহতদের মধ্যে গোলাম কিবরিয়া মির্জা ছাড়া বাকিরা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের ভূমিকা
সংঘর্ষের খবর পেয়ে সুন্দরগঞ্জ থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় উত্তেজিত বিএনপি নেতাকর্মীরা বাবুর ওষুধের দোকানে ভাঙচুরের চেষ্টা করলে পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে তাদের প্রতিরোধ করে। পুলিশের তৎপরতায় পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হওয়ার হাত থেকে রক্ষা পায়।
পুলিশের বক্তব্য
সুন্দরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আবদুল হাকিম আজাদ জানান, বেঞ্চে ধাক্কা লাগার ঘটনা থেকেই এই সংঘর্ষের সূত্রপাত। তিনি বলেন, “যদিও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা রাজনৈতিক পদে রয়েছেন, তবে এটি সরাসরি রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব বলে মনে হচ্ছে না।” ঘটনার সঙ্গে জড়িত তিনজনকে আটক করা হয়েছে এবং বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
স্থানীয়দের প্রতিক্রিয়া
স্থানীয় বাসিন্দারা এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। অনেকে মনে করছেন, তুচ্ছ বিষয়কে কেন্দ্র করে এ ধরনের সংঘর্ষ এলাকার শান্তি-শৃঙ্খলার জন্য ক্ষতিকর। তারা পুলিশ ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দের কাছে এ ধরনের ঘটনা পুনরাবৃত্তি রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করলেও পুলিশের সতর্ক উপস্থিতির কারণে পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তদন্তের অগ্রগতির ওপর নির্ভর করে এ ঘটনার পূর্ণাঙ্গ চিত্র সামনে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।