আওয়ামী লীগ গণহত্যা, হত্যাকাণ্ড ও দুর্নীতির জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা না চাওয়া পর্যন্ত তাদের কোনো ধরনের বিক্ষোভ বা সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। বুধবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি এই মন্তব্য করেন।
শফিকুল আলম তার পোস্টে লেখেন, “যতক্ষণ না আওয়ামী লীগ গণহত্যা, হত্যাকাণ্ড ও দুর্নীতির জন্য ক্ষমা চাইবে এবং তাদের অপরাধীদের বিচারের মুখোমুখি করবে, ততক্ষণ তাদের বিক্ষোভের অনুমতি দেওয়া হবে না।" তিনি আরও বলেন, “মিত্রবাহিনী কি নাৎসিদের বিক্ষোভ করার অনুমতি দিয়েছিল?”
তিনি দাবি করেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে কোনো ন্যায়সঙ্গত বিক্ষোভ নিষিদ্ধ করেনি। গত সাড়ে পাঁচ মাসে কেবল ঢাকায় অন্তত ১৩৬টি বিক্ষোভ হয়েছে, যার ফলে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হলেও সরকার কখনো এসব কর্মসূচি দমনের চেষ্টা করেনি। তবে আওয়ামী লীগের বিক্ষোভকে তিনি 'ফ্যাসিস্টদের প্রতিবাদ' আখ্যা দিয়ে বলেন, "জুলাই-আগস্টের ভিডিও ফুটেজে স্পষ্ট দেখা যায়, আওয়ামী লীগের কর্মীরা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা চালিয়ে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। কয়েকশ ছাত্র-তরুণ, এমনকি শিশুরাও তাদের নৃশংসতার শিকার হয়েছে।”
প্রেস সচিব আরও বলেন, নিউইয়র্ক-ভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদনে শেখ হাসিনার ১৬ বছরের শাসনামলে হত্যা, গুম এবং দুর্নীতির অসংখ্য অভিযোগের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তার শাসনামলে প্রায় ২৩৪ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে, তিন হাজারের বেশি মানুষ বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছেন এবং বিরোধী দলের প্রায় ৬০ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে গায়েবি মামলা দেওয়া হয়েছে। এমনকি দেশের প্রথম হিন্দু প্রধান বিচারপতিকেও জোরপূর্বক পদত্যাগে বাধ্য করা হয় বলে তিনি অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, "কোনো দেশ খুনি ও দুর্নীতিবাজদের আবার ক্ষমতায় আসতে দেয় না। আওয়ামী লীগ যদি কোনো অবৈধ বিক্ষোভ করার সাহস করে, তবে তাদের আইনের মুখোমুখি হতে হবে।”
এদিকে, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পদত্যাগের দাবিতে ফেব্রুয়ারি মাসে একাধিক কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে। দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজের তথ্য অনুযায়ী, আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি অবরোধ ও ১৮ ফেব্রুয়ারি হরতালের ডাক দেওয়া হয়েছে। এই ঘোষণার পরই প্রেস সচিবের এই প্রতিক্রিয়া এসেছে, যা রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন উত্তেজনার জন্ম দিয়েছে।