ক্ষমতা দ্বন্দ্বে পদত্যাগ করলেন ইয়েমেনের প্রধানমন্ত্রী আহমেদ আওয়াদ বিন মোবারক
ক্ষমতা দ্বন্দ্ব ও প্রশাসনিক জটিলতার কারণে ইয়েমেনের প্রধানমন্ত্রী আহমেদ আওয়াদ বিন মোবারক পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। শনিবার (৩ মে) প্রকাশিত এক বিবৃতিতে তিনি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত জানান। দীর্ঘদিন ধরেই সরকারের কাঙ্ক্ষিত রদবদল না হওয়া এবং বিভিন্ন সমস্যার মুখে তিনি এ সিদ্ধান্ত নেন বলে জানিয়েছেন।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট কাউন্সিলের প্রধান রাশাদ আল-আলিমির সঙ্গে ক্ষমতা ভাগাভাগি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রধানমন্ত্রীর এই পদত্যাগ। সরকারে সংস্কার আনতে অন্তত ১২ জন মন্ত্রীকে বরখাস্তের অনুরোধ জানিয়েছিলেন আহমেদ আওয়াদ। কিন্তু প্রেসিডেন্ট আল-আলিমি সেই অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করলে দ্বন্দ্ব আরও প্রকট হয়।
সরকারি সূত্রগুলো জানিয়েছে, আহমেদ আওয়াদের পদত্যাগের পর নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিতে পারেন দেশটির অর্থমন্ত্রী সালেম সালেহ বিন ব্রাইক।
আহমেদ আওয়াদ একসময় ইয়েমেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং তার আগে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আবদ-রাব্বু মনসুর আল-হাদির চিফ অব স্টাফ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ২০১৫ সালে হুথি বিদ্রোহীদের দ্বারা অপহৃত হয়েছিলেন, যা তার রাজনৈতিক জীবনে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা হিসেবে বিবেচিত।
প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের ঘোষণা এমন এক সময় এলো, যখন লোহিত সাগরে হুথি বিদ্রোহীদের হামলার পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র তাদের সামরিক স্থাপনায় হামলা জোরদার করেছে। জানুয়ারি থেকে মার্কিন সামরিক অভিযানের তীব্রতা বেড়েছে, যা মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে বড় সামরিক তৎপরতা বলে মনে করা হচ্ছে।
২০১৪ সাল থেকে ইয়েমেন গৃহযুদ্ধে জর্জরিত। হুথি বিদ্রোহীরা রাজধানী সানা দখল করার পর দেশটির সরকার দক্ষিণাঞ্চলীয় বন্দর শহর এডেনে সরিয়ে নেওয়া হয়। বর্তমানে ইয়েমেনের বিস্তৃত অঞ্চল হুথিদের নিয়ন্ত্রণে, যারা ইরানের সমর্থনে পরিচালিত হয়ে আসছে।
এই জটিল রাজনৈতিক ও সামরিক প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ ইয়েমেন সংকটকে আরও অনিশ্চিত করে তুলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সূত্র: এএফপি, রয়টার্স।