কোনো অপরাধীকে রাজপথে-মাঠে-ময়দানে দেখতে চান না স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, তিনি কোনো অপরাধীকে রাজপথে, বাজারে, মাঠে-ময়দানে দেখতে চান না। তার মতে, প্রত্যেক অপরাধীকে আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও তৎপর হতে হবে।
মঙ্গলবার ঢাকার রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে ‘দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মানবাধিকার ও পরিবেশের উপর গুরুত্বসহ আইন প্রয়োগ’ শীর্ষক কর্মশালায় বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে কঠোর নির্দেশনা দিয়ে তিনি জানান, দেশের অস্থিরতা সৃষ্টির অপতৎপরতা রোধে এবং ষড়যন্ত্রকারীদের আইনের আওতায় আনতে গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ‘ডেভিল হান্ট’ নামে একটি বিশেষ অভিযান পরিচালিত হচ্ছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে গঠিত ‘জয়েন্ট অপারেশন সেন্টার’-এর মাধ্যমে এই অভিযান সারাদেশে তদারকি করা হচ্ছে। মেট্রোপলিটন এলাকায় পুলিশ কমিশনার এবং জেলা পর্যায়ে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ সুপার অভিযানের সমন্বয় করবেন। এ অভিযানে অপরাধীদের দ্রুত চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার এবং বিচারের আওতায় আনতে আদালতের বিচারক, সরকারপক্ষের আইনজীবী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা একযোগে কাজ করছে।
তিনি আরও জানান, ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় আটজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, যাতে অপরাধীদের বিরুদ্ধে সামারি ট্রায়াল (সংক্ষিপ্ত বিচার প্রক্রিয়া) দ্রুত সম্পন্ন করা যায়। অপরাধীদের জামিন প্রতিরোধে আইনজীবীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “আদালতে দায়েরকৃত প্রতিটি মামলার ধার্য তারিখে আইনজীবীরা যেন উপস্থিত থাকেন এবং কোনো সন্ত্রাসী যেন সহজে জামিন না পায়, সে বিষয়ে নজর রাখেন।”
তার বক্তব্যে স্পষ্ট ছিল, অপরাধীদের প্রতি কোনো ধরনের নমনীয়তা দেখানো হবে না। তিনি বলেন, “ফ্যাসিস্ট, সন্ত্রাসী, মানুষদের বুকে গুলি করা হেলমেট বাহিনী, দুষ্কৃতকারী, উসকানিদাতা, জনগণের ভয়ভীতি প্রদর্শনকারী ও দুর্নীতিবাজরা গ্রেপ্তার হয়ে আদালতে যাবে। তবে, তথ্য-প্রমাণের সীমাবদ্ধতার কারণে বা তদন্ত সংস্থার ব্যর্থতায় কেউ যেন জামিন নিয়ে আবার অপরাধে জড়িয়ে না পড়ে, সেটাও নিশ্চিত করতে হবে।”
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার এই বক্তব্য থেকে সরকারের কঠোর অবস্থান স্পষ্ট হয়েছে। বিশেষ করে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং অপরাধীদের দমন করতে তারা এখন আরও কঠোর নীতি অনুসরণ করবে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।