কৃষিজমি নেই, কী করেন রাজধানীতে থাকা ৪২ কৃষি কর্মকর্তা
রাজধানীর মিরপুর, উত্তরা, মোহাম্মদপুর, গুলশান এবং কামরাঙ্গীর চরে কোনো কৃষিজমি নেই। এসব এলাকায় আবাদ হয় না কোনো ফসলও। অথচ সেখানে কৃষিকাজ দেখাশোনার জন্য রয়েছেন ৪২ জন কৃষি কর্মকর্তা এবং একাধিক স্পেয়ার মেকানিকসহ আরও ২৯ জন কর্মচারী।
এই কৃষি কর্মকর্তারা কী করেন—এই প্রশ্নে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান, তারা ছাদবাগানের বিষয়ে পরামর্শ দেন। তবে বাস্তবে ছাদবাগান করতে আগ্রহী মানুষদের অভিজ্ঞতা ভিন্ন। মিরপুরের এক বাসিন্দা তার বারান্দার গাছে পোকার সমস্যা নিয়ে সাহায্য চাইলেও কার্যকর কোনো সহায়তা পাননি। অন্যদিকে, মিরপুর, মোহাম্মদপুর, উত্তরা এবং গুলশানসহ বেশ কয়েকটি এলাকার মানুষ জানিয়েছেন, তারা জানেনই না যে ঢাকায় কৃষি কর্মকর্তারা ছাদবাগানের সেবা দেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, ঢাকা মহানগরীতে ছয়টি কৃষি মেট্রোপলিটন অঞ্চল রয়েছে। এর মধ্যে তেজগাঁওয়ে কিছু কৃষিজমি থাকলেও বাকি এলাকাগুলোতে কোনো কৃষিজমি নেই। ঢাকার ছাদবাগান সম্পর্কিত সাফল্য দাবি করলেও শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আবুল ফয়েজ মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন এবং হার্টিকালচার বিভাগের অধ্যাপক ড. জসীম উদ্দিনের মতে, এসব সাফল্যের পেছনে কৃষি কর্মকর্তাদের ভূমিকা নেই।
মিরপুর, উত্তরা, গুলশান এবং কামরাঙ্গীর চরে অবস্থিত অফিসগুলোতে কর্মীরা প্রায়ই বসে সময় কাটান। ছোট ভবনে পাঁচটি কার্যালয় থাকায় কর্মীরা এক জায়গায় জড়ো হয়ে আড্ডায় মগ্ন থাকেন। ঢাকায় কর্মরত কর্মকর্তারা মূলত বদলির মাধ্যমে এখানে আসেন ঢাকায় থাকার সুযোগ লাভের জন্য।
সরকারি কৃষি কর্মকর্তাদের দায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় কৃষি বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ঢাকার কৃষি উন্নয়নের জন্য জনবল পুনর্বিন্যাস, নতুন প্রকল্প গ্রহণ এবং মনিটরিং ব্যবস্থা শক্তিশালী করা প্রয়োজন। নগর কৃষি উন্নয়নের পাইলট প্রকল্পগুলোর সাফল্যও দুর্বল ব্যবস্থাপনার কারণে দীর্ঘস্থায়ী হয়নি।
কৃষিবিদ ড. কামরুজ্জামান বাবুর মতে, ঢাকায় সবুজায়ন এবং কৃষি উন্নয়নে আধুনিক পরিকল্পনা গ্রহণ করে এই সেক্টরে দক্ষতা ফিরিয়ে আনতে হবে।