মঙ্গলবার, ১লা জুলাই, ২০২৫| রাত ১২:২৪

কুয়ালালামপুরে জমকালো আয়োজনে ‘বাংলাদেশ উৎসব’ উদযাপন

প্রতিবেদক
staffreporter
জুন ২৮, ২০২৫ ১১:২৬ পূর্বাহ্ণ
কুয়ালালামপুরে জমকালো আয়োজনে ‘বাংলাদেশ উৎসব’ উদযাপন

কুয়ালালামপুরে জমকালো আয়োজনে ‘বাংলাদেশ উৎসব’ উদযাপন

মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশ হাইকমিশনের উদ্যোগে বিপুল উৎসাহ ও জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে উদযাপিত হলো ‘বাংলাদেশ উৎসব’। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) ক্রাফট কমপ্লেক্সে আয়োজিত এই উৎসবে গান, নাচ, ফ্যাশন শো এবং দেশীয় খাবারের মাধ্যমে বাংলাদেশি সংস্কৃতির বৈচিত্র্য তুলে ধরা হয়।

অনুষ্ঠানস্থলটি সাজানো হয়েছিল বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী রিকশা, হস্তশিল্প ও কারুপণ্যে। প্রদর্শিত হয় বাংলাদেশের উন্নয়ন ও ইতিহাসভিত্তিক একাধিক প্রামাণ্যচিত্র। এ আয়োজনে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মালয়েশিয়ার ট্যুরিজম, আর্টস ও কালচার মন্ত্রণালয়ের সেক্রেটারি জেনারেল ওয়াইবিএইচজি দাতো শাহারুদ্দিন বিন আবু সহত। অংশগ্রহণ করেন মালয়েশিয়ার বিভিন্ন দপ্তরের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, কূটনীতিক, প্রবাসী বাংলাদেশি নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ এবং হাইকমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা।

বাংলাদেশ হাইকমিশনার মো. শামীম আহসান ও তাঁর সহধর্মিণী অতিথিদের উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান। তিনি অনুষ্ঠানে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ এবং ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। সেইসঙ্গে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী দাতো সেরি আনোয়ার ইব্রাহিমের সাম্প্রতিক বাংলাদেশ সফর এবং অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বে নতুন সরকারের প্রতি মালয়েশিয়ার সমর্থনের কথা তুলে ধরেন।

হাইকমিশনার বলেন, বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য বহুমাত্রিক এবং তা উৎসবের মাধ্যমে উদযাপন করা আমাদের জাতীয় চেতনার অংশ। এই উৎসব মালয়েশিয়া-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করবে বলে তিনি আশাবাদ প্রকাশ করেন। অনুষ্ঠানে তিনি সংস্কৃতিকে দেশের ভাবমূর্তি তুলে ধরার শক্তিশালী হাতিয়ার হিসেবেও বর্ণনা করেন।

বক্তব্যে মালয়েশিয়ার সেক্রেটারি জেনারেল বাংলাদেশের বহুজাতিক ও অন্তর্ভুক্ত সমাজের প্রশংসা করেন এবং বাংলাদেশ ফেস্টিভালের আয়োজনকে অত্যন্ত সময়োপযোগী ও প্রশংসনীয় বলে উল্লেখ করেন।

উৎসবে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, প্রবাসী বাংলাদেশি শিল্পী এবং হাইকমিশনের সদস্যদের অংশগ্রহণে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা মুগ্ধ করে দর্শকদের। বিশেষ আকর্ষণ ছিল জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী মেহরিনের পরিবেশনা। অতিথিদের আপ্যায়নে ছিল রকমারি ঐতিহ্যবাহী খাবার, যার মধ্যে ‘স্মোকড ইলিশ’ বিদেশি অতিথিদের মধ্যে দারুণ প্রশংসা কুড়ায়।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ কর্নার, ফুচকা, চা, ঝালমুড়ি, পিঠা ঘর এবং রিকশার স্টল উপস্থিত দর্শনার্থীদের উৎসাহিত করে। পাশাপাশি প্রাণ, হোপ ও মৈত্রীর মতো বাংলাদেশি কোম্পানিগুলোর পণ্য প্রদর্শনী এবং ন্যাশনাল ব্যাংক ও সিটি ব্যাংকের রেমিট্যান্স বুথ দর্শনার্থীদের সেবা সম্পর্কে অবহিত করে।

‘বাংলাদেশ কর্নার’-এ ছিল বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, সংস্কৃতি, অর্থনীতি, রপ্তানিযোগ্য পণ্য ও হস্তশিল্পের প্রদর্শনী। আয়োজনের ভেতরে বাংলাদেশের সম্ভাবনা, বিনিয়োগ, পর্যটন ও ঐতিহ্য নিয়ে প্রামাণ্যচিত্রও প্রদর্শিত হয়। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী জামদানি ফ্রেম উপহার দেওয়া হয় মালয়েশিয়ার সেক্রেটারি জেনারেলকে।

বাংলাদেশ হাইকমিশনের এই আয়োজনে উপস্থিত সবার মাঝে বাংলাদেশকে নিয়ে গর্ব ও উৎসবের উচ্ছ্বাস স্পষ্ট হয়ে ওঠে। বিদেশি অতিথিরাও বাংলাদেশের সংস্কৃতির প্রতি তাদের মুগ্ধতা ও শ্রদ্ধা প্রকাশ করেন। এই আয়োজনকে কেন্দ্র করে কুয়ালালামপুরে এক টুকরো বাংলাদেশ গড়ে ওঠে বলেই মনে করেছেন অনেক অংশগ্রহণকারী।

মন্তব্য করুন
Spread the love

সর্বশেষ - বানিজ্য ও অর্থনীতি