কাশ্মির সীমান্তে টানা অষ্টম রাতেও ভারত-পাকিস্তান সেনাদের গোলাগুলি

কাশ্মিরের নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) বরাবর টানা অষ্টম রাতেও ভারত ও পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার (১ মে) রাতে এই গোলাগুলি হলেও এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। শুক্রবার (২ মে) এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

ভারতীয় গণমাধ্যমের দাবি, পাকিস্তান সেনাবাহিনী বিনা উসকানিতে কুপওয়ারা, বারামুলা, পুঞ্চ, নওশেরা এবং আখনুর—এই পাঁচটি এলাকায় ভারতীয় সেনা পোস্ট লক্ষ্য করে ছোট অস্ত্র দিয়ে গুলি চালিয়েছে। জবাবে ভারতীয় সেনারাও এলওসি বরাবর পাল্টা গুলি চালিয়েছে। তবে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে এই ঘটনার বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করা হয়নি, এবং দেশটির সংবাদমাধ্যমেও তেমন কোনো প্রতিবেদন দেখা যায়নি।

এই সীমান্ত উত্তেজনা এমন এক সময় বাড়ছে, যখন ২২ এপ্রিল কাশ্মিরের পেহেলগামে ভয়াবহ হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর দুই দেশের সম্পর্কে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। হামলার জেরে ভারত একাধিক কড়া পদক্ষেপ নেয়। এর মধ্যে ছিল সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত, আতারি সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ এবং কূটনৈতিক সম্পর্ক হ্রাসের ঘোষণা।

ভারতের অভিযোগ, ওই হামলায় সীমান্তপারের সন্ত্রাসীদের সম্পৃক্ততা রয়েছে। এর পর থেকেই পাকিস্তান সীমান্তের বিভিন্ন অংশে গুলি চালাতে শুরু করে, যা ২৪ এপ্রিল রাত থেকে টানা চলছে বলে এনডিটিভির দাবি। এমনকি মঙ্গলবার এই গোলাগুলি আন্তর্জাতিক সীমান্তের পারগওয়াল সেক্টর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে।

সেই দিন ভারত ও পাকিস্তানের সামরিক কর্মকর্তাদের মধ্যে হটলাইন আলোচনাও হয়, যেখানে ভারত পাকিস্তানকে বিনা উসকানিতে গুলি চালানো বন্ধ করতে সতর্ক করে বলে জানায় সংবাদমাধ্যম পিটিআই।

জবাবে পাকিস্তান ভারতের পদক্ষেপের পাল্টা প্রতিক্রিয়া দেখায়। তারা আকাশসীমা ভারতীয় বিমানের জন্য বন্ধ করে দেয়, সব ধরনের বাণিজ্যিক কার্যক্রম স্থগিত করে এবং তৃতীয় দেশের মাধ্যমে বাণিজ্য বন্ধ করে দেয়। পাশাপাশি ভারতের পানি চুক্তি স্থগিতের ঘোষণাকে প্রত্যাখ্যান করে পাকিস্তান হুঁশিয়ারি দেয়—পানি বন্ধ করে দেওয়া হলে সেটিকে “যুদ্ধ ঘোষণার” সমতুল্য ধরা হবে।