২০২৪ সালের ছাত্র আন্দোলনের সময় ঢাকার রামপুরা এলাকায় একটি নির্মাণাধীন ভবনের ছাদ থেকে এক তরুণকে গুলি করার অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া পুলিশ কর্মকর্তা এএসআই চঞ্চল চন্দ্র সরকারকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে।
এ ঘটনাটি ঘটে ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই, যখন বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ চলছিল। আন্দোলনকারীরা বেশ কিছু দাবির জন্য রাস্তায় নেমে আসে এবং বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ জানায়। রামপুরা এলাকায় আন্দোলনকারীরা যখন তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছিল, তখন চঞ্চল চন্দ্র সরকার ওই এলাকায় একটি নির্মাণাধীন ভবনের ছাদে অবস্থান নেন এবং সেখানে থেকে তিনি একটি তরুণকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন। গুলি এসে লাগে তরুণ আমির হোসেনের দিকে, কিন্তু সৌভাগ্যক্রমে তিনি আহত না হয়ে বেঁচে যান। এই ঘটনা পুরো এলাকায় তীব্র আলোচনার সৃষ্টি করে এবং এর পরপরই চঞ্চল চন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।
গ্রেফতারির পর, ২৬ জানুয়ারি রাতে ঢাকা মহানগর পুলিশের একটি দল, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সহকারী প্রসিকিউটর অ্যাটর্নি জেনারেল তানভীর হাসান জোহার নেতৃত্বে, খাগড়াছড়ির দীঘিনালা থানা থেকে চঞ্চল চন্দ্র সরকারকে গ্রেফতার করে। ২৭ জানুয়ারি তাকে ঢাকায় আনা হয় এবং ধানমন্ডি থানায় হেফাজতে রাখা হয়।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির হওয়ার পর, তাকে বিচারকের সামনে তোলা হয় এবং এর মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করা হয়। এএসআই চঞ্চল চন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা খুবই গুরুতর। আন্দোলনকারীদের প্রতি পুলিশের হিংসাত্মক আচরণ এবং গুলি চালানোর ঘটনাটি দেশে একটি রাজনৈতিক ও সামাজিক সংকট তৈরি করে, যা এখনও সবার মধ্যে তীব্র আলোচনা সৃষ্টি করছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এ ঘটনা দেশের মধ্যে পুলিশি বলপ্রয়োগ এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের ওপর গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার জন্ম দিয়েছে। সরকারের ভূমিকা, পুলিশের কর্মকাণ্ড এবং বিচারিক ব্যবস্থার ওপর জনগণের আস্থা পুনর্স্থাপন করতে হলে, এ ধরনের ঘটনা নিয়ে কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
বর্তমানে, চঞ্চল চন্দ্র সরকারকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে এবং মামলার শুনানি শুরু হয়েছে। তার বিরুদ্ধে গুলি চালানোর পাশাপাশি আরও কিছু অভিযোগ উঠতে পারে, যা এই মামলার পরবর্তী পর্যায়ে তুলে ধরা হবে।