কানাডার ম্যানিটোবায় ভয়াবহ দাবানল, হাজারো মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে
কানাডার ম্যানিটোবা প্রদেশে ভয়াবহ দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে, যার গতিবেগ এতটাই দ্রুত যে বাসিন্দাদের সরিয়ে নিতে সেনাবাহিনীর উড়োজাহাজ ও হেলিকপ্টার পর্যন্ত ব্যবহার করা হচ্ছে। পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি হওয়ায় পুরো প্রদেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করেছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এবং আন্তর্জাতিক সহায়তা চেয়েছে। শনিবার রাতে বিবিসির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রধানত ম্যানিটোবা ও সাসকাচোয়ান প্রদেশে দাবানল ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। ম্যানিটোবায় বর্তমানে ২৫টি দাবানল সক্রিয় রয়েছে, যার মধ্যে ১০টি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণের বাইরে। সাসকাচোয়ানেও চলছে আরও ১৬টি দাবানল, যার মধ্যে ৭টি “অনিয়ন্ত্রিত” হিসেবে চিহ্নিত করেছে কানাডার ইন্টারএজেন্সি ফরেস্ট ফায়ার সেন্টার (সিআইএফএফসি)। সংস্থাটি সতর্ক করে বলেছে, এই দুই প্রদেশে এখন অতিমাত্রায় আগুনের ঝুঁকি বিরাজ করছে।
ম্যানিটোবার উত্তরের ফার্স্ট নেশনস সম্প্রদায় পুকাতাওয়াগান-এর বাসিন্দাদের নিরাপদে সরিয়ে নিতে সেনাবাহিনী, ম্যানিটোবা ওয়াইল্ডফায়ার সার্ভিস এবং হেভি আরবান সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ টিম একসঙ্গে কাজ করছে। তারা বিমান ও হেলিকপ্টারের মাধ্যমে মানুষদের দ্রুত সরিয়ে নিচ্ছে। শুক্রবার পর্যন্ত পুকাতাওয়াগান থেকে প্রায় দুই হাজারের বেশি মানুষকে সরিয়ে নেওয়া বাকি ছিল। অন্যদিকে, ফ্লিন ফ্লন শহরের প্রায় ৫ হাজার বাসিন্দাকে আগেই সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, এখন সেখানে কেবল জরুরি পরিষেবার কর্মীরাই অবস্থান করছেন।
দাবানলের ধোঁয়া শুধু কানাডার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি, তা ছড়িয়ে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রেও। এই ধোঁয়ার কারণে প্রায় ২২ মিলিয়ন মার্কিন নাগরিক শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত সতর্কতার আওতায় রয়েছেন। বিশেষ করে মিশিগান, উইসকনসিন ও মিনেসোটার উত্তরাঞ্চলে ধোঁয়ার মাত্রাকে “সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর” বলা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালেও কানাডায় রেকর্ড পরিমাণ দাবানল হয়েছিল, যেখানে প্রায় ১৭.৩ মিলিয়ন হেক্টর বনভূমি আগুনে পুড়ে যায়। জাতিসংঘের জলবায়ু সংস্থা সতর্ক করে বলেছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দাবানলের অনুকূল পরিবেশ এখন আরও ঘন ঘন এবং দীর্ঘ সময় ধরে তৈরি হচ্ছে। দীর্ঘ গরমে ভূমি ও গাছপালার আর্দ্রতা কমে যাওয়ায় সামান্য আগুনও দ্রুত ভয়াবহ আকার ধারণ করছে।