মঙ্গলবার, ১লা জুলাই, ২০২৫| রাত ৪:১৪

কাতারে মার্কিন ঘাঁটিতে ইরানের প্রতীকী হামলা ও যুদ্ধবিরতির তাৎপর্য

প্রতিবেদক
staffreporter
জুন ২৬, ২০২৫ ২:৫৭ অপরাহ্ণ
কাতারে মার্কিন ঘাঁটিতে ইরানের প্রতীকী হামলা ও যুদ্ধবিরতির তাৎপর্য

কাতারে মার্কিন ঘাঁটিতে ইরানের প্রতীকী হামলা ও যুদ্ধবিরতির তাৎপর্য

ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল যৌথ হামলার পাল্টা জবাবে ইরান সম্প্রতি কাতারে অবস্থিত মার্কিন সামরিক ঘাঁটি আল-উদেইদে হামলা চালায়। যদিও এই ঘাঁটি আগেই নিরাপত্তার কারণে খালি করা হয়েছিল, তবুও এই হামলার কৌশলগত গুরুত্ব এবং প্রতীকী তাৎপর্য নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে জোর আলোচনা চলছে। হামলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ইরান ও ইসরায়েল যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইরানের এই হামলা ছিল মূলত প্রতীকী। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি দাবি করেছেন, ইরানের ফোর্দো, নাতাঞ্জ ও ইসফাহান পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে সফল হামলা চালানো হয়েছে এবং বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে। যদিও ইরান হামলার কথা স্বীকার করলেও এই ক্ষয়ক্ষতির দাবি অস্বীকার করেছে।

কেন আল-উদেইদ ঘাঁটি?

বিশেষজ্ঞ হুসেইন আরিয়ান বিবিসিকে জানিয়েছেন, ইরান জানত যে কাতারের এই ঘাঁটিটি খালি করে ফেলা হয়েছে। ঘাঁটিটি ইরান থেকে মাত্র ২০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত, এবং তা সহজেই লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হতে পারে। ১৯৯৬ সালে প্রতিষ্ঠিত আল-উদেইদ মার্কিন ঘাঁটিটি যুক্তরাষ্ট্রের বাহিরে সর্ববৃহৎ বিমান ঘাঁটি এবং সেন্ট্রাল কমান্ডের (CENTCOM) একটি প্রধান কেন্দ্র।

হুসেইন আরিয়ান আরও বলেন, ইরান কাতারকে আগেই জানিয়েছিল এই হামলার বিষয়ে এবং কাতার হয়তো পরোক্ষভাবে মার্কিনদেরও সতর্ক করেছিল। ফলে এই হামলা ছিল নিখাদ প্রতীকী—একটি বার্তা পাঠানোর উদ্দেশ্যে। এই কৌশল ইরানের ২০২০ সালে ইরাকে আইন আল-আসাদ ঘাঁটিতে চালানো হামলার ধাঁচের সাথে সাযুজ্যপূর্ণ, যখন তারা মার্কিন ড্রোন হামলায় নিহত জেনারেল কাসেম সোলাইমানির প্রতিশোধ নিয়েছিল।

কাতারের কূটনৈতিক ভারসাম্য চ্যালেঞ্জের মুখে

উল্লেখযোগ্যভাবে, কাতার উপসাগরীয় দেশগুলোর মধ্যে একমাত্র রাষ্ট্র, যারা সরাসরি ইরান-বিরোধী জোটের অংশ নয়, অথচ তাদের ভূখণ্ডে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় সামরিক উপস্থিতি রয়েছে। ২০১৭ সালের উপসাগরীয় সংকটের পর থেকে কাতার যে সতর্ক ও ভারসাম্যপূর্ণ কূটনীতি চালিয়ে আসছে—এই হামলা সেই কৌশলের ওপর এক বড় ধরনের চাপ তৈরি করেছে।

বিশ্লেষকদের মতে, ইরান এই হামলার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ দুই স্তরেই রাজনৈতিক বার্তা দিতে চেয়েছে। একদিকে তারা যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিক্রিয়ার বার্তা দিয়েছে, অপরদিকে নিজেদের জনগণকে দেখাতে চেয়েছে—তারা ‘জবাব’ দিয়েছে।

এই হামলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ইরান ও ইসরায়েল যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়া পরিস্থিতির নাটকীয়তা আরও বাড়িয়েছে। এটি প্রমাণ করে, উত্তেজনা যতই তীব্র হোক না কেন, পর্দার আড়ালে কূটনৈতিক চ্যানেলগুলো সক্রিয় ছিল।

সূত্র: বিবিসি বাংলা

মন্তব্য করুন
Spread the love

সর্বশেষ - বানিজ্য ও অর্থনীতি

আপনার জন্য নির্বাচিত