জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, "আমাদের রাজনৈতিক দল এ ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে আসছে।" তিনি আরও জানান, অভ্যুত্থানের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলামকে ক্ষমতার মন্ত্রণালয় ছেড়ে আবারও জনতার কাতারে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। সারজিস আলম বিশ্বাস করেন, যারা জনতার আগে ক্ষমতাকে প্রাধান্য দিয়েছেন, তারা একদিন আবার জনতার ডাকে সাড়া দিয়ে ক্ষমতার পথ ছেড়ে জনতার পাশে দাঁড়াতে প্রস্তুত হতে পারেন।
রোববার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার রয়েল রিসোর্টে ‘আপনার চোখে নতুন বাংলাদেশ’ শিরোনামে এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি জানান, "আমরা অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে সবাইকে একসঙ্গে রেখে নতুন একটি দল গঠন করতে চাচ্ছি। আমাদের অনেক আশা-আকাঙ্ক্ষা রয়েছে। বিগত ১৬ বছর যে চর্চাগুলো ছিল, আমরা এখন আবার সে চর্চাগুলো নতুন করে দেখতে পারছি। স্পষ্ট কথা- যারা এসব চর্চাগুলো করে এসেছে তাদের রক্তে ওই চর্চা একদম মিশে গিয়েছে। সেই চর্চা থেকে বের হয়ে আসতে তাদেরকেই নেতৃত্ব দিতে হবে।"
সারজিস আলম আরও বলেন, "বাংলাদেশে এখন অনেকে রাজনীতি করছে বিভিন্ন রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মের ব্যানারে। বিগত ১৫-১৬ বছরে কোন নেতাকে কাছে পেয়েছেন? কোনো নেতা আত্মগোপন কিংবা দেশের বাহিরে থেকে বিভিন্ন সময়ে সুবিধা আদায় করেছেন। অনেক নেতা বিগত ১৬ বছর জনগণের কাছে ছিলেন না। এখন তারা নতুন রূপে ফিরে এসে আপনাদের মাথায় হাত বোলাচ্ছেন।"
তিনি বলেন, "শেখ হাসিনা নিজেকে বাঁচানোর জন্য দেশ থেকে পালিয়ে গেছে, তার আত্মীয়-স্বজনদের জন্য নিরাপদ স্থান তৈরি করেছে, কিন্তু তার নেতাকর্মীদের নিয়ে যায়নি। তারা বিচারের মুখোমুখি থাকতে বাধ্য হয়েছে। শেখ হাসিনা নিজের পরিবার বাঁচানোর জন্য পালিয়ে গেছেন, কিন্তু তার তৃণমূল নেতাকর্মীদের জন্য কিছু করেননি।"
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনের অন্যতম নেতা সারজিস আলম আরও বলেন, "শেখ হাসিনা বিদেশে বসে মোদিকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করছেন এবং দেশি নেতাকর্মীদের উস্কানি দিয়ে বিপদে ফেলছেন।"
তিনি আরও বলেন, "আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ থাকি, তখন আমাদের কোনো দেশি বা বিদেশি শক্তির প্রয়োজন হবে না। যখন আমি আন্দোলন করছিলাম, তখন আমরা ঐক্যবদ্ধ ছিলাম, তাই আমাদের কোনো শেল্টারের প্রয়োজন হয়নি।"
এছাড়া জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলন সোনারগাঁ উপজেলা শাখার যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন- জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য তুহিন মাহমুদ, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সোনারগাঁয়ের সংগঠক শাকিল সাইফুল্লাহ, আন্দোলনের সময়ে পুলিশের গুলিতে আহত শাকিল আহমেদ, শহীদ মেহেদী হাসানের বাবা সানাউল্লাহ ও শহীদ ইমরান হোসেনের মা কোহিনুর আক্তার।