বাংলাদেশের এস আলম গ্রুপের বিরুদ্ধে আটটি ব্যাংকের মধ্যে চারটি থেকে প্রায় ১ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী, বেনামি ও নামসর্বস্ব কাগুজে প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ৯৩,৩৬৪ কোটি টাকা ঋণ জালিয়াতি করা হয়েছে।
ইসলামী ব্যাংক থেকে এস আলম গ্রুপ নামে-বেনামে সরাসরি ৮৫,৪৪৫ কোটি টাকা ও পরোক্ষভাবে ২০,০৩৮ কোটি টাকার সুবিধা নিয়েছে। পরোক্ষ সুবিধার মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন বেনামি প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ এবং কর্মীদের প্রভিডেন্ড ও গ্র্যাচুয়িটি ফান্ড থেকে অর্থ উত্তোলন।
এস আলম গ্রুপ ২০১১ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডে ১৮টি ভুয়া কোম্পানি গড়ে তুলেছে। এ প্রতিষ্ঠানগুলোকে অর্থ পাচারের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে।
এস আলমের বিরুদ্ধে ১০ বিলিয়ন ডলার পাচারের অভিযোগ উঠেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বিষয়টি তদন্ত করছে। যদিও অতীতে আইনি জটিলতায় তদন্ত থমকে গিয়েছিল, হাইকোর্টের নির্দেশে তা আবারও শুরু হয়েছে।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান জানিয়েছেন, এই ধরনের দুর্নীতি কোনো জবাবদিহিতাহীন পরিবেশ ছাড়া সম্ভব নয়। সরকারের মদদেই এসব হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণাধীন ব্যাংকগুলোর বোর্ড ভেঙে দিয়েছে। এখন পর্যন্ত ১১টি ব্যাংকের বোর্ড নতুনভাবে পুনর্গঠন করা হয়েছে।
এস আলম গ্রুপের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ দেশের আর্থিক খাতের দুর্নীতির মাত্রা ও গভীরতা উন্মোচন করেছে। এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত ও দায়ীদের বিচার নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি।