এসকে সুরের লকারে মিলল ৫ কোটি টাকার সম্পদ
দীর্ঘ নাটকীয়তার পর বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার সুর চৌধুরীর (এসকে সুর) গোপন লকার থেকে প্রায় ৫ কোটি টাকার সম্পদ উদ্ধার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। রোববার সকাল থেকে শুরু হওয়া অভিযান শেষে দুদকের পরিচালক কাজী সায়েমুজ্জমান জানিয়েছেন, লকার থেকে উদ্ধার করা হয়েছে এক কেজি ৫ গ্রাম স্বর্ণ, ১ লাখ ৬৯ হাজার ৩০০ ডলার, ৫৫ হাজার ইউরো এবং ৭০ লাখ টাকার এফডিআর। সব মিলিয়ে এসব সম্পদের মোট মূল্য প্রায় ৪ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।
দুদক পরিচালিত ১০ ঘণ্টার এই তল্লাশি অভিযানে ২২ পাতার জব্দ তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। লকারের বিষয়টি আগে থেকেই সন্দেহভাজন ছিল, এবং তদন্ত চলাকালে দুদক জানতে পারে এসকে সুরের বাসায় অবৈধ সম্পদের সম্ভাবনা রয়েছে। তার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের লকার সম্পর্কে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতেই আদালতের অনুমোদন নিয়ে এই অভিযান চালানো হয়।
দুদকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, লকার থেকে পাওয়া সম্পদগুলো এসকে সুরের বৈধ আয়ের অন্তর্ভুক্ত কিনা, তা যাচাই করা হবে। এফডিআরগুলো তার নিজ নামে নয়, ফলে এর মালিকানা সম্পর্কেও তদন্ত চলবে। উদ্ধারকৃত সম্পদ আপাতত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জিম্মায় রাখা হয়েছে এবং আদালতের পরবর্তী নির্দেশনার ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মো. আমজাদ হোসাইন খান জানিয়েছেন, লকারের সামগ্রী সরকারী কোষাগারে জমা দেওয়া হতে পারে বা আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এদিকে দুদকের অভিযানের সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দা সালেহা নুর উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ১৯ জানুয়ারি এসকে সুরের বাসায় অভিযান চালিয়ে ১৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা জব্দ করা হয়েছিল। তখনই জানা যায় যে, তার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের লকারে মূল্যবান সামগ্রী থাকতে পারে। দুদকের চিঠির পর বাংলাদেশ ব্যাংক বিষয়টি নিশ্চিত করে এবং লকারের সামগ্রী স্থানান্তর বা হস্তান্তর স্থগিত রাখে।
এই ঘটনা সমাজে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের এ ধরনের কার্যক্রম সাধারণ মানুষের আস্থা বাড়াচ্ছে, যদিও এসকে সুরের মতো প্রভাবশালী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়া কতটা কার্যকর হবে, তা সময়ই বলে দেবে।