উপজেলা পর্যায়ে অধস্তন আদালত সম্প্রসারণের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে নীতিগত ঐক্যমত গড়ে উঠেছে। সোমবার (৮ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে অনুষ্ঠিত সংলাপে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এই বিষয়ে একমত পোষণ করে।
কমিশনের প্রস্তাবে বলা হয়, উপজেলায় স্থায়ী আদালত স্থাপনের জন্য ভৌগলিক অবস্থান, জেলা সদর থেকে দূরত্ব, যাতায়াত ব্যবস্থা, জনসংখ্যার ঘনত্ব এবং মামলার চাপ বিবেচনায় নিতে হবে। বিশেষ করে যেসব উপজেলায় বর্তমানে চৌকি আদালত চালু রয়েছে, সেগুলোর ভবিষ্যৎ নিয়ে পুনর্বিবেচনার কথাও ওঠে আলোচনায়।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, জেলা সদরের নিকটবর্তী উপজেলাগুলোর জন্য আলাদা আদালতের প্রয়োজন নেই। তিনি চৌকি আদালত রূপান্তরের ক্ষেত্রে একটি জরিপ বা সমীক্ষার অনুরোধ জানান।
তবে আদালত বাড়লে দুর্নীতি বাড়বে এমন ধারণার বিরোধিতা করেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আজাদ। তার মতে, উপজেলা পর্যায়ে বিচারসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছানোর জন্যই আদালত সম্প্রসারণ দরকার।
এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাবেদ রাসিন দ্রুত সংসদীয় আসনের ভিত্তিতে আদালত স্থাপনের তাগিদ দেন।
দলগুলোর পক্ষ থেকে আদালত সম্প্রসারণের সময়সীমা নির্ধারণের প্রস্তাবও উঠে আসে। আলোচনায় সিনিয়র সহকারী জজ ও প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ, দেওয়ানি মামলায় আর্থিক এখতিয়ার বাড়ানো এবং উপজেলা পর্যায়ে আইনগত সহায়তা সম্প্রসারণের কথাও উঠে আসে।
বিরতির পর সংলাপের দ্বিতীয় অংশে আলোচনা শুরু হয় জরুরি অবস্থা সম্পর্কিত সাংবিধানিক বিধান নিয়ে।
বর্তমানে সংবিধানের ১৪১ ক, খ, গ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জারি হওয়া জরুরি অবস্থার বিধান নাগরিক অধিকার হরণ করে বলে অভিযোগ আসে। প্রস্তাব রাখা হয়, জরুরি অবস্থার মেয়াদ যেন ৬০ দিনের বেশি না হয় এবং এই সময় নাগরিকদের সাংবিধানিক অধিকার স্থগিত না করা যায়। এমনকি জরুরি অবস্থার সময়ও যেন নাগরিকদের আদালতে যাওয়ার অধিকার অক্ষুণ্ণ থাকে— এই মর্মেও সংশোধনের আহ্বান জানানো হয়।