উত্তর-পূর্ব ভারতে প্রবল বর্ষণে মৃত্যু ৩০, সিকিমে আটকা ১,৫০০ পর্যটক
প্রবল বর্ষণ, আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে উত্তর-পূর্ব ভারতের বিস্তীর্ণ এলাকা। গত দু’দিনে আসাম, মেঘালয়, মণিপুর, অরুণাচল প্রদেশ ও মিজোরামে এসব দুর্যোগে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৩০ জন। মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। রোববার এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে আসাম, অরুণাচল প্রদেশ, মেঘালয়, মণিপুর ও মিজোরাম। আসামে ১২টি জেলায় প্রায় ৬০ হাজার মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন বলে জানায় রাজ্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ। কামরূপ মেট্রোপলিটন জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় ভূমিধসে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে গোয়াহাটির উপকণ্ঠ বন্ডা এলাকায় প্রাণ হারিয়েছেন ৩ নারী। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আসামের নগর উন্নয়নমন্ত্রী জয়ন্ত মল্ল বড়ুয়া।
অরুণাচল প্রদেশে ভূমিধস ও হঠাৎ বন্যায় মারা গেছেন ৯ জন। সবচেয়ে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে ইস্ট কামেং জেলায়, যেখানে দুটি পরিবারের সাতজন সদস্য একসঙ্গে নিহত হন। তাদের গাড়ি একটি ভূমিধসের কবলে পড়ে রাস্তা থেকে ছিটকে গিয়ে পানির স্রোতে ভেসে যায়।
আবহাওয়া অধিদপ্তর আসামের কিছু এলাকায় রেড ও অরেঞ্জ এলার্ট এবং অন্যান্য উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যে অরেঞ্জ ও ইয়েলো এলার্ট জারি করেছে। এতে নতুন করে ভূমিধস ও বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। শুক্রবার আসামের রাজধানী গৌহাটিতে ৬৭ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে—১১১ মিলিমিটার। ফলে শহরের অনেক এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়ে এবং ব্রহ্মপুত্রসহ বিভিন্ন নদীর পানি বিপদসীমার কাছাকাছি চলে যায়।
অন্যদিকে, শনিবার রাতে সিকিমেও মেঘভাঙা বৃষ্টি হয়েছে, যার ফলে উত্তর সিকিমে পর্যটকদের যাওয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তিস্তা নদীর পানি ভয়াবহভাবে বেড়েছে। লাচুং ও লাচেনের সঙ্গে যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। দুর্যোগের কারণে সিকিমে অন্তত ১,৫০০ পর্যটক আটকে পড়েছেন বলে জানা গেছে। স্থানীয় পুলিশ ও বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে।