ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধবিরতি: নেতানিয়াহুকে ‘সবচেয়ে পরাজিত ব্যক্তি’ বললেন ব্রিটিশ বিশ্লেষক
যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব ও কাতারের মধ্যস্থতায় অবশেষে যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছেছে ইসরায়েল ও ইরান। মঙ্গলবার সকাল থেকে কার্যকর হওয়া এই চুক্তিকে ঘিরে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। এর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত মন্তব্যটি এসেছে যুক্তরাজ্যের বাকিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকচারার এবং নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ অ্যান্থনি গ্লেসের পক্ষ থেকে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য মিরর–এ দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অ্যান্থনি গ্লেস ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে “সবচেয়ে বড় পরাজিত ব্যক্তি” হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, “আমরা যা দেখছি, তা হলো—এই মুহূর্তে ইরান সরকার বিজয়ী। ট্রাম্পও নয়, আর নেতানিয়াহু তো অবশ্যই নয়। সারাজীবন ইরানের আয়াতুল্লাহ সরকারের পতন চেয়েছেন নেতানিয়াহু, কিন্তু তা পাননি।”
গ্লেসের মতে, ইসরায়েল সরকার ইরানে সরকার পতনের চেষ্টায় ছিল, যা অনেকটা ১৯৮০ সালের ইরান-ইরাক যুদ্ধের স্মৃতি মনে করিয়ে দেয়। কিন্তু বাস্তবতা হলো—ইসরায়েলের জনসংখ্যা ৯০ লাখের মতো, আর ইরানের প্রায় ৯ কোটি। এমন অসম শক্তির সংঘাতে যদি ব্যাপক ধ্বংসযুদ্ধ শুরু হতো, ক্ষয়ক্ষতির দিক দিয়ে ইরানই টিকে যেত বলে মন্তব্য করেন তিনি।
যুদ্ধবিরতির ঘোষণার পর এটি ভেস্তে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হলেও, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হস্তক্ষেপে ইসরায়েল সরে আসে চুক্তি ভঙ্গের দৃষ্টিকোণ থেকে। গ্লেস জানিয়েছেন, নেতানিয়াহুকে ট্রাম্প ‘এফ-বোমা’ (অশ্লীল গালাগাল) ছুড়ে হুমকি দেন—যা চুক্তি রক্ষা করতে বাধ্য করে তাকে।
এ প্রসঙ্গে গ্লেস বলেন, “যুদ্ধবিরতি অনেক সময়ই দ্রুত কার্যকর হয় না। সেনাদের কাছে নির্দেশ পৌঁছাতে সময় লাগে, বিশেষ করে যখন যোগাযোগব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত থাকে।”
সব মিলিয়ে এই যুদ্ধবিরতিকে বিশ্লেষকরা দেখছেন কূটনৈতিকভাবে ইরানের লাভের দিক থেকে আর নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক ও কৌশলগত ব্যর্থতার প্রতিচ্ছবি হিসেবে।
সূত্র: দ্য মিরর