ইরানে হিজাব পরিধান না করলে মৃত্যুদণ্ড
ইরানে নতুনভাবে পাস হওয়া “শালীনতা ও হিজাবের সংস্কৃতি” আইন অনুসারে, কোনো নারী যদি হিজাব না পরেন, তবে তার সর্বোচ্চ শাস্তি হতে পারে মৃত্যুদণ্ড বা ১৫ বছরের কারাদণ্ড। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
আইনটি চলতি মাসের প্রথম দিকে পাস করেছে ইরানি কর্তৃপক্ষ। এর ৩৭ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, যারা বিদেশি মিডিয়া কিংবা আন্তর্জাতিক সংস্থার কাছে “অসামঞ্জস্যপূর্ণ পোশাক” বা অশালীনতা নিয়ে কোনো তথ্য প্রকাশ বা প্রচার করবেন, তাদের ১০ বছরের কারাদণ্ড এবং ১২,৫০০ ইউরো জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।
ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান এই আইনের বিরোধিতা করেছেন। তিনি সতর্ক করে বলেন, “এই আইন ইরানি সমাজে আরও অসন্তোষ তৈরি করবে।”
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, আইনটি কার্যকর হলে যেসব নারীরা খোলামেলা পোশাকে প্রকাশ্যে আসেন বা শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে অংশ নেন, তারা মৃত্যুদণ্ডের মুখোমুখি হতে পারেন। সংস্থাটির মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক উপ-পরিচালক ডায়ানা এলতাহাওয়ি বলেছেন, “এই আইন নারীদের ওপর নিপীড়ন আরও কঠোর করবে এবং তাদের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন করবে।”
মানবাধিকার কর্মী নাজানিন আফশিন-জাম মাক্কে বলেছেন, “এই আইনটি লিঙ্গ-ভিত্তিক বৈষম্যের উজ্জ্বল উদাহরণ, যা মহিলাদের অধিকার এবং স্বাধীনতার ওপর সরাসরি আঘাত।”
ইরানি সাংবাদিক, মানবাধিকারকর্মী, ইসলামি পণ্ডিত এবং আইনজীবীরা এই আইনটির তীব্র বিরোধিতা করছেন। তাদের মতে, এটি মহিলাদের উপর ক্রমবর্ধমান দমনমূলক ব্যবস্থাকে বৈধতা দেবে এবং নারীদের স্বাধীনতায় বড় বাধা হয়ে দাঁড়াবে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, আইনটি ইরানে সামাজিক অস্থিরতা বাড়াবে এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর তীব্র সমালোচনার মুখে পড়বে।