ইরানে বোমাবর্ষণের মধ্যেই ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় সামরিক অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে দখলদার ইসরায়েল। গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় গাজায় আরও ৭৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। মঙ্গলবার (২৪ জুন) দুপুরে দেওয়া এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের ধারাবাহিক হামলায় এখন পর্যন্ত গাজায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৬ হাজার ৭৭ জনে এবং আহত হয়েছেন ১ লাখ ৪৮ হাজার ৮৪৮ জন। এদের মধ্যে বিপুলসংখ্যক নারী, শিশু ও বেসামরিক মানুষ রয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজার শাসকগোষ্ঠী হামাস ইসরায়েলের অভ্যন্তরে অতর্কিত হামলা চালায়। এতে ১,২০০ জন নিহত হন এবং ২৫১ জন ইসরায়েলিকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যায় হামাস। পরদিনই গাজায় ব্যাপক সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী (আইডিএফ)। চলমান এই সংঘাতে প্রাণ হারানো ও ধ্বংসযজ্ঞের মাত্রা প্রতিদিনই বাড়ছে।
আন্তর্জাতিক চাপে ২০২৪ সালের ১৯ জানুয়ারি ইসরায়েল সাময়িক যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিলেও, মাত্র দুই মাসের মধ্যেই তা ভেঙে ১৮ মার্চ থেকে গাজায় ফের অভিযান শুরু করে তারা। এই দ্বিতীয় দফার অভিযানে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৬৪৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং প্রায় ১৪ হাজার ৫৭৪ জন আহত হয়েছেন।
জিম্মি ইস্যুতেও উদ্বেগ বাড়ছে। ২৫১ জন জিম্মির মধ্যে এখনো অন্তত ৩৫ জন জীবিত রয়েছেন বলে ধারণা করছে ইসরায়েল। তাদের উদ্ধারে সামরিক অভিযান চালানোর ঘোষণা দিয়েছে আইডিএফ।
এদিকে জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় একাধিকবার এই হামলা বন্ধ করতে ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানালেও কোনো সাড়া মেলেনি। বরং ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, হামাসকে সম্পূর্ণ ধ্বংস না করা পর্যন্ত এবং সব জিম্মি মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত গাজায় অভিযান চলবে।
গাজায় প্রতিদিনের মতো আরও মৃত্যু ও ধ্বংসের দৃশ্য তৈরি হলেও এই সংঘাতের কোনো দ্রুত সমাধান বা শান্তিপূর্ণ সমঝোতার ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে না।