ইজতেমা মাঠে সংঘর্ষের পুনরাবৃত্তি এড়াতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে: আইজিপি

গাজীপুরের টঙ্গী তুরাগ নদের তীরে অবস্থিত ইজতেমা মাঠ পরিদর্শন করেছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম। আগামী শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) থেকে শুরু হতে যাওয়া প্রথম পর্বের বিশ্ব ইজতেমার প্রস্তুতি হিসেবে আজ বুধবার বেলা ১১টায় তিনি মাঠটির সার্বিক পরিস্থিতি পরিদর্শন করেন।

পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আইজিপি বাহারুল আলম। তিনি বলেন, "মুসল্লিরা এখানে দ্বীন ও দুনিয়ার কামিয়াবি হাসিলের জন্য আসেন, তবে কিছুদিন আগে তাদের মাঝে অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে। মতদ্বৈততা মানুষের মাঝে থাকে, তাদের মাঝে সেটি ছিল। তবে, উভয় পক্ষই অত্যন্ত দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়েছেন। আগামী ৩১ জানুয়ারি থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মাওলানা জোবায়েরের অনুসারীরা প্রথম পর্বের ইজতেমা করবেন এবং অপর পক্ষ ১৪ থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তাদের ইজতেমা পালন করবেন। এর মধ্যে কোনো মতদ্বৈততা নেই, উভয় পক্ষই শান্তিপূর্ণভাবে ইজতেমা করবেন।"

আইজিপি এ সময় বর্তমান প্রেক্ষাপটের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, “এখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব পালন করছে, বিশেষত জুলাই-আগস্টের ঘটনার পর এবং এখনো অনেক অস্ত্র বাইরে আছে। তাই আমাদের নিরাপত্তাব্যবস্থা আগের চাইতে সুদৃঢ় করা হয়েছে। সম্প্রতি যেসব সংঘর্ষ ঘটেছে, সেগুলোর পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে, সে জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।”

ইজতেমা মাঠে ১৭ ডিসেম্বর মধ্যরাতে সংঘর্ষের ঘটনায় তিন মুসল্লি নিহত হওয়ার পর, এবারও বিশ্ব ইজতেমার তারিখ আলাদাভাবে ঘোষণা করা হয়েছে। প্রথম পর্বে মাওলানা জোবায়েরের অনুসারীরা এবং দ্বিতীয় পর্বে মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারীরা ইজতেমা করবেন।

এছাড়া, মাঠে ইজতেমার সময় পরিবর্তন নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আইজিপি বলেন, "আমরা কিছু সময় বাড়িয়েছি, যেন প্রথম পক্ষ আমাদের কাছে মাঠ বুঝিয়ে দেওয়ার পর পুরো মাঠ ও আশপাশের এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিতে পারি। মাঠ বুঝে নেয়ার পর যদি নিরাপত্তার কোনো ঝুঁকি না থাকে, তখন আমরা দ্বিতীয় পক্ষকে ইজতেমা আয়োজনের আহ্বান জানাব।"

আজ দুপুর ১২টার দিকে ইজতেমা মাঠে প্রবেশ করা মুসল্লিদের মধ্যে অনেকেই মাঠ প্রস্তুতের কাজে জড়িত ছিলেন এবং কিছু মুসল্লি বয়ান মঞ্চের সামনে তাবলিগের বিভিন্ন বিষয়ে বক্তব্য শুনছিলেন।

আইজিপি বাহারুল আলমের পরিদর্শনকালে গাজীপুর পুলিশের কমিশনার নাজমুল করিম, উপকমিশনার এন এম নাসিরুদ্দিন এবং মাওলানা জোবায়েরের অনুসারীদের শীর্ষ মুরব্বি মাহফুজুল হান্নান উপস্থিত ছিলেন।