ইউরোপে মার্কিন দূতাবাস বন্ধের পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্রের
যুক্তরাষ্ট্র এবার ইউরোপের একাধিক দেশে নিজেদের দূতাবাস বন্ধের পরিকল্পনা করছে। পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী মার্কিন কূটনৈতিক মিশনে কর্মীসংখ্যা কমানোরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান-কে জানিয়েছেন, আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই এসব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের পথে হাঁটবে যুক্তরাষ্ট্র।
বিশ্লেষকদের মতে, কূটনৈতিক উপস্থিতি সংকুচিত করা ও ইউএসএআইডি (USAID) ভেঙে দেওয়ার কারণে বৈশ্বিক রাজনীতিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব কমে যেতে পারে। এতে চীন ও রাশিয়ার মতো শক্তিগুলো বিশ্বমঞ্চে নিজেদের অবস্থান আরও দৃঢ় করার সুযোগ পাবে।
যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পিত পদক্ষেপের আওতায় ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশে অবস্থিত ছোট দূতাবাস বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে। দ্য গার্ডিয়ান-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রাথমিকভাবে জার্মানির লাইপজিগ, হামবুর্গ ও ডুসেলডর্ফ, ফ্রান্সের বোর্দো ও স্ট্রাসবুর্গ, ইতালির ফ্লোরেন্সসহ আরও কিছু শহরে মার্কিন কনস্যুলেট বন্ধ করার কথা ভাবা হচ্ছে। তবে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর।
বিশ্লেষকরা বলছেন, অভিবাসী বিতাড়ন এবং বৈদেশিক সহায়তা কমানোর পর এবার কূটনৈতিক মিশন সংকুচিত করার সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক অবস্থানকে দুর্বল করতে পারে। বিশেষ করে ইউক্রেন ইস্যুতে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে যখন টানাপোড়েন চলছে, তখন এই পরিকল্পনা সামনে এলো।
এছাড়া ওয়াশিংটনের পররাষ্ট্র দফতরের বেশ কয়েকটি ব্যুরো একীভূত করার পরিকল্পনাও রয়েছে। এতে মানবাধিকার, শরণার্থী এবং মানবপাচার রোধে কাজ করা প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রমেও পরিবর্তন আসতে পারে।
বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্র যদি কূটনৈতিক উপস্থিতি কমিয়ে দেয়, তবে বিশ্ব রাজনীতিতে চীন ও রাশিয়ার মতো প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলো নিজেদের প্রভাব বিস্তারের সুযোগ পাবে। ইউএসএআইডি-র কার্যক্রম সীমিত হলে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবও কমে যেতে পারে।
যদিও মার্কিন প্রশাসন এখনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়নি, তবে আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই কূটনৈতিক মিশন ও কর্মীসংখ্যা কমানোর পরিকল্পনা বাস্তবায়ন শুরু হবে বলে মনে করা হচ্ছে।