যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেন-রাশিয়ার চলমান যুদ্ধ থামাতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করেছেন। নির্বাচনী প্রচারণায় দেওয়া প্রতিশ্রুতির ধারাবাহিকতায় তিনি যুদ্ধ থামানোর বিষয়ে দ্রুত উদ্যোগ নিয়েছেন। ট্রাম্প দাবি করেছেন, তার নেতৃত্বে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই যুদ্ধ বন্ধ করা সম্ভব।
ট্রাম্প যুদ্ধের অবসানে ন্যাটো সদস্যপদ প্রশ্নে ইউক্রেনের ওপর শর্ত আরোপের প্রস্তাব দিয়েছেন। তার পরিকল্পনা অনুযায়ী, ইউক্রেনের ন্যাটো সদস্যপদ অন্তত ২০ বছরের জন্য স্থগিত রাখলে এই সংঘাত নিরসন হতে পারে। ট্রাম্প বিশ্বাস করেন, যুদ্ধ অব্যাহত থাকলে ইউক্রেন জয়ী হতে পারবে না, বরং এতে পশ্চিমা দেশগুলোর অর্থনৈতিক ক্ষতি বাড়বে এবং চীন বিশ্ববাণিজ্যে আরও এগিয়ে যাবে।
ট্রাম্প সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে ইউক্রেন ও রাশিয়ার নেতাদের প্রতি যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, "যুদ্ধের পাগলামি বন্ধ করতে জেলেনস্কি ও পুতিনের একটি চুক্তি করা উচিত।" যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে তিনি নিজের রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক প্রভাব কাজে লাগানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
যদিও রাশিয়া ট্রাম্পের প্রস্তাবকে অপর্যাপ্ত বলেছে। তাদের মতে, সমস্যার গভীরে গিয়ে নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট মূল বিষয়গুলো সমাধান না করলে যুদ্ধ বন্ধ হবে না। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কিও সতর্ক করে বলেছেন, যদি ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করা হয়, তবে রাশিয়া পুনরায় হামলা চালাতে পারে।
ট্রাম্প ইউক্রেনে সামরিক সহায়তা বন্ধ এবং যুক্তরাষ্ট্রকে ন্যাটো থেকে বের করার বিষয়ে বিবেচনা করছেন। এ ধরনের মন্তব্য পশ্চিমা দেশগুলো ও যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। কারণ এটি কেবল ইউক্রেনের জন্যই নয়, পুরো ন্যাটো জোটের কাঠামোর জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে।
ট্রাম্প মনে করেন, পশ্চিমা দেশগুলো ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে অযথা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক অবস্থানকে দুর্বল করে তুলছে। এর পাশাপাশি, যুদ্ধের ফলে রাশিয়া ও চীনের সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হচ্ছে, যা বৈশ্বিক শক্তির ভারসাম্যে পরিবর্তন আনতে পারে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ শুধু দুই দেশের মধ্যে সংঘাত নয়; এতে জটিল ভূরাজনৈতিক স্বার্থ জড়িত। ট্রাম্পের প্রচেষ্টা উল্লেখযোগ্য হলেও এককভাবে এই সংঘাত থামানো তার জন্য কঠিন হতে পারে। তবুও, গাজার সাম্প্রতিক যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নে ট্রাম্পের ভূমিকা তার কূটনৈতিক দক্ষতার একটি উদাহরণ।
ট্রাম্পের রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক উদ্যোগ কেমন ফলাফল বয়ে আনবে, তা এখনও অনিশ্চিত। তবে তার নেতৃত্বে ইউক্রেন যুদ্ধের নতুন মোড় নেওয়ার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে।