বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু অভিযোগ করেছেন যে, আওয়ামী লীগ সরকার সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি নির্মম নির্যাতন চালিয়েছে। তিনি দাবি করেন, খালেদা জিয়াকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী, যিনি ১৯৯১-১৯৯৬ এবং ২০০১-২০০৬ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্ত্রী এবং দলের বর্তমান চেয়ারপারসন। তার রাজনৈতিক জীবনে তিনি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছেন।
বিএনপি নেতারা অভিযোগ করেন যে, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলায় তাকে কারাবন্দি করা হয়েছে। ২০১৮ সালে দুর্নীতির অভিযোগে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়, যা বিএনপি নেতারা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা হিসেবে বিবেচনা করেন। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, "তিনবারের প্রধানমন্ত্রী, স্বাধীনতার ঘোষকের স্ত্রী, আপসহীন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি নির্মম নির্যাতন করেছেন ফ্যাসিবাদ, স্বৈরাচার শেখ হাসিনা।"
কারাগারে থাকাকালীন খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য অবনতি ঘটে। বিএনপি নেতারা অভিযোগ করেন যে, সরকার তার চিকিৎসায় অবহেলা করেছে এবং তাকে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করেছে। তারা দাবি করেন, খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে পাঠানোর অনুমতি দেওয়া উচিত ছিল, যা সরকার মঞ্জুর করেনি।
বিএনপি নেতারা খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুষ্ঠু চিকিৎসার দাবিতে বিভিন্ন সময়ে আন্দোলন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছেন। তারা সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে তাকে নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়া হোক।
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা ও শাস্তি আইনানুগ প্রক্রিয়ায় হয়েছে এবং এতে সরকারের কোনো হস্তক্ষেপ নেই। তারা দাবি করেন, বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে তার কাজ করছে এবং খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়েও সরকার যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছে।
বর্তমানে খালেদা জিয়া জামিনে মুক্ত আছেন এবং ঢাকায় নিজ বাসভবনে অবস্থান করছেন। তবে, তার স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ এখনও রয়ে গেছে, এবং বিএনপি নেতারা তার পূর্ণ মুক্তি ও চিকিৎসার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছেন।
বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি সরকারের আচরণ নিয়ে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের মধ্যে মতপার্থক্য স্পষ্ট। একদিকে বিএনপি নেতারা এটিকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও নির্যাতন হিসেবে দেখছেন, অন্যদিকে সরকার দাবি করছে যে, সবকিছু আইনানুগ প্রক্রিয়ায় হয়েছে। এই পরিস্থিতি দেশের রাজনৈতিক পরিবেশে উত্তেজনা ও বিভাজন বাড়িয়েছে।