দীর্ঘ ২৪ বছর সিরিয়ার ক্ষমতায় ছিলেন বাশার আল আসাদ। গেল ৮ ডিসেম্বর, জীবনের নিরাপত্তার কারণে তিনি সিরিয়া ছেড়ে পালান। এদিন তার এবং তার পরিবারের পাঁচ দশকের ক্ষমতার চক্র ভেঙে যায়। বিদ্রোহীরা তার বাড়ি দখল করে দেখে, সেদিন তিনি তাড়াহুড়ো করে পালিয়েছিলেন। রান্না করা খাবার চুলায় রয়ে গেছে এবং ব্যক্তিগত অ্যালবামগুলো সেখানেই পড়ে আছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে বাশার আল আসাদের শেষ দিনগুলোর বিবরণ তুলে ধরে। প্রতিবেদনে বলা হয়, সিরিয়া ছাড়ার পরিকল্পনা আসাদ প্রায় কারও সঙ্গে ভাগাভাগি করেননি। এমনকি তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী, কর্মকর্তা এবং আত্মীয়রাও বিষয়টি জানতেন না। আসাদ তার পরিকল্পনা গোপন রাখতে বড় ধরনের প্রতারণা এবং বিভ্রান্তি ছড়ান।
দেশ ছাড়ার আগের দিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে ৩০ জন সামরিক ও নিরাপত্তা কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠকে তিনি জানান, রুশ সামরিক সহায়তা আসছে এবং পদাতিক বাহিনীকে প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু কয়েক ঘণ্টা পর নিজেই রাশিয়ায় পালিয়ে যান।
রয়টার্স জানায়, পালানোর কয়ে ঘণ্টা আগে নিজের কার্যালয়ের ম্যানেজারকে কাজ শেষে বাসায় ফেরার কথা জানালেও তিনি বিমানবন্দরে চলে যান। তার মিডিয়া উপদেষ্টা বুতাইনা শাবানকে বক্তৃতা লেখার জন্য বাড়িতে ডেকে পাঠালেও শাবান গিয়ে তাকে না পেয়ে হতভম্ব হন।
পরাজয় আসন্ন বুঝতে পেরেও ইরানকে সামরিক হস্তক্ষেপের অনুরোধ করেননি আসাদ। তার আশঙ্কা ছিল, এতে ইসরায়েল তাদের লক্ষ্যবস্তু বানাতে পারে। মস্কো থেকেও সামরিক হস্তক্ষেপের প্রস্তাব নাকচ করা হয়।
আসাদ প্রথমে সংযুক্ত আরব আমিরাতে আশ্রয় চাইলে আবুধাবি তা প্রত্যাখ্যান করে। পরে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন তার নিরাপত্তার দায়িত্ব নেন। রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বিদ্রোহীদের সঙ্গে চুক্তি করে আসাদকে মস্কোতে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করেন।
আসাদের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ গাজি আল জালালি জানান, পালানোর রাতেও আসাদ তাদের বিভ্রান্ত করেছিলেন। আগের রাতের শেষ ফোনালাপে তিনি বলেছিলেন, ‘আগামীকাল দেখা যাবে।’